রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

ডাম্পারের নম্বরপ্লেট জালিয়াতির পর্দা ফাঁস, কয়লাপাচার-কাণ্ডে ধৃত বিজেপি নেতা

July 25, 2022 | 2 min read

এবার কয়লাপাচার-কাণ্ডে পুলিশের হাতে ধৃত এক বিজেপি নেতা। ধৃত ওই বিজেপি নেতা, যোগেন্দ্রকুমার সাহা ওরফে মনুর বিরুদ্ধে ইসিএলে কয়লা পরিবহণে যুক্ত ডাম্পারের নম্বর জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। কয়লাপাচার-কাণ্ডে বিজেপি নেতার গ্রেপ্তারি ঘিরে চরম অস্বস্তিতে বিজেপি নেতৃত্ব। সম্প্রতি চাকরি প্রতারণার মামলাতেও ধৃত বিজেপি নেতার নাম জড়িয়েছিল।​

নম্বর প্লেট পাল্টে পাল্টে দেদার কয়লা পাচার চালানো হত। ডাম্পার মালিক, চালক ও ট্রান্সপোর্টারদের নিয়ে কয়লা সিন্ডিকেট তৈরি করে ফেলেছিল বিজেপি নেতা মনু। পরিবহণ ব্যবসায়ী বিজেপি নেতা মনু, ছিলেন গোটা চোরাকারবারের মাস্টারমাইন্ড। শুক্রবার ২২ জুলাই রাতে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ অভিযান চালিয়ে দুর্গাপুর থেকে ওই বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার ২৩ জুলাই মনুকে আসানসোল আদালতে হাজির করা হলে, বিচারক তার জামিনের আবেদন খারিজ করে ৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

মনুর গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে অস্বস্তি এড়াতে মরিয়া বিজেপি। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ দত্ত দায় এড়াচ্ছে। অন্যদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, শিল্পাঞ্চলে যোগেন্দ্রকুমার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। গোয়েন্দাদের তদন্তে উঠে আসছে, মনুর নেতৃত্বেই চলত কয়লাপাচার সিন্ডিকেট। বিভিন্ন খাদান থেকে ডাম্পারে করে সাইডিংয়ে কয়লা নিয়ে যাওয়া হয়। কয়লা তোলার আগেই ডাম্পারের নম্বর ইসিএলের কাছে নথিভুক্ত করা হয়। নথিভুক্ত করা ওই নম্বরের এক নম্বর বিশিষ্ট নকল নম্বরপ্লেট লাগানো আরেকটি ডাম্পারে ব্ল্যাক স্টোন ভর্তি করে তৈরি রাখা হত। খাদান থেকে কয়লা বোঝাই ডাম্পার বের হত ঠিকই কিন্তু তা সাইডিং অবধি পৌঁছত না। সাইডিং পর্যন্ত পৌঁছে যেত কালো পাথর বোঝাই ডাম্পার। আর অন্যদিকে কয়লা বোঝাই লরি নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিত চোরাকারবারিরা।

চলতি বছরের ২৬ জুন সিআইএসএফ ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে রানিগঞ্জ থানার পাঞ্জাবিমোড় এলাকায় তিনটি ডাম্পার আটক করেছিল। তিনটির মধ্যে দুটি ডাম্পারের নম্বর একই ছিল WB 37C 3592। একটিতে ১৮ মেট্রিক টন কয়লা ছিল এবং পিছনের ডাম্পারটিতে ব্ল্যাক স্টোন ভর্তি ছিল। একটি ডাম্পার সম্পূর্ণ খালি ছিল। একজন চালক পুলিশের হাতে, ধরা পড়ে যান। ওই ধৃত চালকই পুলিশকে এই কয়লা পাচার সিন্ডিকেটের কারসাজির করা জানায়। ওই কয়লা বোঝাই লরি কালিপাহাড়ি ও সিপি থেকে সাতগ্রাম সাইডিংয়ে যাওয়া হচ্ছিল। রানিগঞ্জ থানার তরফে স্বত:প্রনোদিনভাবে মামলা দায়ের করা হয়, তদন্ত শুরু হয় এবং কালক্রমে মামলা তদন্তভার গ্রহণ করে কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ।

গোয়েন্দা তদন্তে কয়লাপাচার-কাণ্ডের অন্যতম প্রধান চক্রী হিসেবে মনু সাহার নাম উঠে আসে। প্রসঙ্গত, একদা বিজেপির এসসি মোর্চার জেলা সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন এই মনু। পরিবহণ ব্যবসা ছাড়াও, তাঁর একটি বেসরকারি কলেজ রয়েছে। এছাড়াও পুলিশি তদন্তে উঠে আসছে, দিল্লিসহ বিভিন্ন জায়গায় ধৃত বিজেপি নেতার একাধিক হোটেল রয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Scam, #number plate, #dumper, #bjp, #asansol, #Durgapur

আরো দেখুন