সুদীপ্তকে জেরা করতে প্রেসিডেন্সি জেলে কাঁথি থানার তদন্তকারী দল, চাপে শুভেন্দু
সরকারি নথি উধাও, রাজ্যের প্রকল্পের টাকা তছরুপ, সারদা কর্তা সুদীপ্তর থেকে মোটা টাকা আত্মসাৎ এবং সর্বোপরি সারদাকাণ্ডের তদন্তে সুদীপ্ত সেনকে জেরা করতে রবিবার ৩১ জুলাই বেলা ১১টা নাগাদ কাঁথি থানার তদন্তকারী দল প্রেসিডেন্সি জেলে পৌঁছয়। সাম্প্রতিক সুদীপ্ত সেনের তরফে করা কয়েকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই প্রেসিডেন্সি জেলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে আসেন কাঁথি থানার আইসিসহ পাঁচ সদস্যের একটি তদন্তকারী দল। এদিন প্রায় তিন ঘন্টা জেরা চলে।
আরও পড়ুনঃ শুভেন্দুর কীর্তি ফাঁস, প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়ে তদন্তের দাবি সুদীপ্ত সেনের
কাঁথি পুরসভার আর্থিক লেনদেন, পুরসভার ফাইল কীভাবে লোপাট হল, কোন খাতে কত টাকা নেওয়া হয়েছিল, কাকে টাকা দিয়েছিলেন সারদা কর্তা– সেই সব প্রশ্নের উত্তরের খোঁজেই এসেছিলেন তদন্তকারীরা। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কাঁথি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাস জানান, সুদীপ্ত সেন তাদের সঙ্গে তদন্তে সাহায্য করেছেন। তারা অনেক কিছু জানতে পেরেছেন বলেও জানান অমলেন্দু বাবু। ফাইল উধাওয়ের বিপুল অঙ্কের টাকার লেনদেন হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠছে। সম্প্রতি কাঁথি পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান অভিযোগ করেছিলেন, কাঁথি পুরসভা থেকে সারদা সংক্রান্ত ফাইল লোপাট হয়ে গিয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেস তরফে গত ২৪ জুন সুদীপ্ত সেনের একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। সেই ভিডিওতে সুদীপ্তকে বলতে শোনা যায়, শুভেন্দু তাকে নিয়মিত ব্ল্যাকমেল করতেন। তাই তিনি বাধ্য হয়ে শুভেন্দুকে টাকা দিয়েছিলেন। ভিডিওতে দেখা যায়, এক জন সুদীপ্তর কাছে জানতে চাইছেন তিনি কার কথায় কাঁথিতে গিয়েছিলেন? জবাবে সুদীপ্ত শুভেন্দুর নাম বলেন। দ্বিতীয় চিঠির বয়ানে শুভেন্দু অধিকারীর নাম ছিল, বলেও জানান সুদীপ্ত। কত টাকা নিয়েছিল, কী বলে টাকা নিত? প্রশ্নের জবাবে সুদীপ্ত বলেন, একটি জমির এবং আরেকটি স্যাংশনড প্ল্যানের বিষয় ছিল। প্ল্যান চাইতে গেলেই ব্ল্যাকমেল করত। এরপর থেকেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের দাবিতে পথে নেমেছিল তৃণমূল।
আরও পড়ুনঃ সারদা কাণ্ডে টাকা নিয়েছেন শুভেন্দু! আদালতে বিস্ফোরক সুদীপ্ত সেন
এরপর ৩০ শে জুন এক মামলার শুনানির জন্যে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে নিয়ে আসার সময় বিস্ফোরক দাবি করেন সুদীপ্ত।
আরও পড়ুনঃ কাঁথির অধিকারী পরিারের বিরুদ্ধে ফের ক্ষোভ উগরে দিলেন সুদীপ্ত সেন
সারদা কর্তার অভিযোগ, কাঁথিতে একটি বিল্ডিং করার জন্যে কাঁথি পুরসভাতে ৫০ লক্ষ টাকা জমা দিতে বলেছিলেন শুভেন্দু। এরপর ৯০ লক্ষ টাকা দিয়ে তারা লেবার হাট সম্পূর্ণ করেছিলেন। কিন্তু শুভেন্দু প্ল্যান দেননি। আর সেই সংক্রান্ত ফাইলই উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করছে কাঁথি পুরসভা। শুভেন্দুর ছোট ভাই সৌমেন্দু অধিকারীর কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়তেই সরদার ফাইল লোপাট হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সুদীপ্ত সেন একাধিকবার বলেছেন শুভেন্দু অধিকারী কাঁথি পুরসভা এলাকায় নির্মাণের জন্য তার থেকে চেক, ড্রাফটের মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়েছিলেন। শুভেন্দুর ভাই সৌমেন্দুর নামেও টাকা দিয়েছিলেন সুদীপ্ত সেন, তেমনটাই জানিয়েছিলেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্ত দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। তারা আশা করছেন, ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যেই তদন্ত শেষ হবে।