কলকাতা চষে ফেলেছিলেন ধৃত ঝাড়খণ্ডের বিধায়করা, CID-তদন্তে প্রকাশ্যে বিস্ফোরক তথ্য
হাওড়ায় বিপুল টাকাসহ ধরা পড়েছেন প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ক। আর এতেই জাতীয় রাজনীতিতে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। টাকার উৎস কী? কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছিল এত টাকা, এই সব নিয়েই শুরু হয়েছে তদন্ত। প্রথম তদন্তে উঠে আসছে, গুয়াহাটি থেকে ফিরে ওই তিন কংগ্রেস বিধায়ক ৩০ জুলাই গোটা দিন শহরের নানান প্রান্তে ঘুরে বেরিয়েছিলেন।
নিউটাউন থেকে বেরিয়ে তিনটি গাড়ি রীতিমতো সারা কলকাতা চষে ফেলে, মুম্বই রোড ধরে কোলাঘাটের দিকে রওনা দিয়েছিলেন কংগ্রেস বিধায়কেরা। হাওড়ার রানিহাটিতে জামতাড়ার কংগ্রেস বিধায়ক ইরফান আনসারির গাড়িটি ধরা পড়লেও, অন্য দুটি গাড়ির কোন খোঁজ মেলেনি। পুলিশের অনুমান ওই দুটি গাড়িতেও কিছু ছিল। গাড়ি দুটির খোঁজ শুরু করেছে তদন্তকারীরা। গাড়িতে উদ্ধার হওয়া ৫০ লক্ষ টাকার উৎস সম্পর্কে কোন তথ্য না মেলায় ইতিমধ্যেই তিন বিধায়ক ইরফান আনসারি, রাজেশ কছপ এবং নমন বিক্সল কোঙ্গারিকে গ্রেপ্তার করেছে হাওড়া গ্রামীণ জেলার পুলিশ।
৩১ জুলাই যুব কংগ্রেস নেতা কুমার প্রতীক এবং গাড়ির চালক চন্দন কুমারকেও গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তভার নিয়েছে সিআইডি। হাওড়া জেলা আদালতে ধৃতদের পেশ করা হলে, গ্রেপ্তার হওয়া ৫জনকে ১০ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিআইডি এবং আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা জেরা করছেন। গ্রেপ্তার বিধায়কদের দাবি ছিল, বিশ্ব আদিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে শাড়ি বিতরণ করার জন্যে, তা কিনতে বড়বাজারে এসেছিলেন তিন জন। আর এতেই ঘনিয়েছে রহস্য। শাড়ি কিনতে হলে, বড়বাজার না গিয়ে তারা দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় দিনভর কী করছিলেন? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে তদন্তকারীরা।
ঝাড়খণ্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা অবিনাশ পাণ্ডের কথায়, ঝাড়খণ্ডের কোন কোন কংগ্রেস বিধায়ক দিল্লি ও গুয়াহাটিতে গিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে দেখা করেছেন বা ভিডিও কলে কথা বলেছেন, সেই সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য রয়েছে তাদের কাছে। অবিনাশ পাণ্ডের সাফ অভিযোগ, এবার ঝাড়খণ্ডেও মহারাষ্ট্র মতোই সরকার ফেলতে তৎপর হয়েছে বিজেপি।
ঝাড়খণ্ডের বারমো বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস বিধায়ক কুমার জয়মঙ্গল আরগোড়া থানায় ধৃত দলীয় বিধায়কদের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন। কুমার জয়মঙ্গলের অভিযোগ, হেমন্ত সোরেনের সরকার ফেলতে বিধায়ক প্রতি ১০ কোটি টাকা এবং মন্ত্রিত্বের টোপ দিচ্ছে বিজেপি। তার দাবি, ওই তিনজন ধৃত বিধায়ক তাকেও কলকাতায় ডেকেছিল এবং তাকেও অসমের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়েছিল। অন্যদিকে ঝাড়খণ্ডের শাসক দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার প্রধান মুখপাত্র সুপ্রিয় ভট্টাচার্যের কথায়, বিজেপির মুখোশ খুলে গিয়েছে, বিগত দুই বছর যাবৎ হেমন্ত সোরেনের সরকার ফেলার চেষ্টা করছে বিজেপি। কিন্তু হাজার চেষ্টা করেও সরকার ভাঙা যাবে না বলেই জানাচ্ছেন প্রত্যয়ী সুপ্রিয়।