ইছামতীর কচুরিপানা পাড়ি দিল বিদেশে, পরিবেশবান্ধব রাখি বানিয়ে চমক বনগাঁর
কচুরিপানা নিয়ে পরিবেশবান্ধব রাখি বানিয়ে সকলকে চমকে দিল বনগাঁ। ইছামতী নদীর কচুরিপানা দিয়ে তৈরি করা সেই রাখি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কানাডার প্রেসিডেন্টসহ আরও পাঁচ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছে। ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে কচুরিপানার রাখি উপহার দেওয়া হয়েছে।
বনগাঁ পৌর এলাকার ৫০০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী কচুরিপানা থেকে বিভিন্ন ধরণের সামগ্রী তৈরি করে। মাদুর, ব্যাগ, ফাইল, টুপি, টেবিল ক্লথসহ প্রায় ৫০ ধরনের সামগ্রী তৈরি করেছেন তারা। রাখিপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে বনগাঁর প্রায় ১০০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা ২০ হাজার রাখি তৈরি করেছেন। সোমবার ৮ আগস্ট বনগাঁর পুরসভার একটি অনুষ্ঠানে কচুরিপানার রাখিকে সকলের সামনে আনা হয়।
বনগাঁ শহরের প্রায় ১০ হাজার জন মহিলা, ১ হাজার ২০০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তাদের মধ্যেই ৫০০ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্তা মহিলা কচুরিপানা থেকে প্রায় ৫০ ধরণের সামগ্রী তৈরির কাজ করছেন। ইছামতীর কচুরিপানা দিয়ে ২০ হাজার রাখি তৈরি করা হয়েছে। পরিবেশবান্ধব রাখির দাম ১৫ টাকা। বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রধান জানান, তারা কচুরিপানা থেকে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে পৌঁছে দিতে চাইছেন। কচুরিপানাকে হাতিয়ার করে বনগাঁর অর্থনীতির বদল ঘটানোই তাদের লক্ষ্য।
দীর্ঘদিন হল বনগাঁয় ইছামতী গতি হারিয়েছে, যার নেপথ্যে কচুরিপানাই দায়ী। বহুদিন যাবৎ ইছামতিকে কচুরিপানা মুক্ত করার দাবি উঠলেও, ইছামতি কচুরিপানা মুক্ত হয়নি। কচুরিপানার সরিয়ে দিলেও আবার তা চলে আসত। বর্ষাকালে বাংলাদেশের দিক থেকে নিয়মিত কচুরিপানা ঢুকত। বিষে বিষ ক্ষয়ের মতোই সমস্যা সমাধানে কচুরিপানাকেই হাতিয়ার করা হয়। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের এই কাজে যুক্ত করে বনগাঁ পুরসভা। এরপরেই ৫০০ স্বনির্ভর গোষ্ঠী কচুরিপানা থেকে নানান সামগ্রী তৈরির কাজ শুরু করে। এবার তাদের হাতে তৈরি কচুরিপানার রাখি দিয়েই কচুরিপানা থেকে নির্মিত সামগ্রীর বিদেশ সফর শুরু হল।