নজরে বিহার: রয়েছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা, বুধবারই শপথ নেবেন চাচা, ভাতিজা
মঙ্গলবার সকাল থেকে জল্পনার পর দুপুরেই বিজেপি’র হাত ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন নীতীশ। বিকেলে রাজভবনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এনডিএ (NDA) ছাড়লেন তিনি। পঞ্চমবার ছাড়লেন মুখ্যমন্ত্রীত্ব। দ্বিতীয়বার ধরলেন লালুপ্রসাদের দল রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) হাত।
রাজভবনে ইস্তফা দিয়ে সোজা চলে যান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবির বাড়ি। সেখানে গিয়েই আলোচনায় বসেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের সঙ্গে। তার পরেই তেজস্বী এবং তাঁর দাদা তেজপ্রতাপের সঙ্গে হেঁটে পৌঁছে যান রাজভবনে।
রাজভবন থেকে বেরিয়ে নীতীশ বলেন, ‘‘১৬৪ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে আমাদের। প্রত্যেক বিধায়ক সমর্থন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন।’’ তার পরেই মাইক ধরিয়ে দেন তেজস্বীকে। এরপর তেজস্বী (Tejashwi Yadav) বলেন, ‘‘সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে জনগণের মধ্যে শুধু বিভেদ তৈরি করতে পারে বিজেপি। দেখুন নিজের জোটশরিকদের কী করেছে বিজেপি। তাদের নির্মূল করতে চেয়েছে। পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্রের দিকে দেখুন। বিহারেও সেটাই করতে চাইছিল। আমরা বিহারে বিজেপির উদ্দেশ্য সফল হতে দেব না।’’
উল্লেখ্য নীতীশের এনডিএ ছাড়ার অন্যতম কারণ রাজনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এমনিতেই তিনি জোটে ছিলেন ছোট শরিক। তার উপর আবার কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরসিপি সিংয়ের মাধ্যমে জেডিইউতে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। সদ্যই শনিবার সরকারিভাবে দল ছেড়েছেন আরসিপি। তাতেই দলে ভাঙনের আশঙ্কা বেড়ে যায় নীতীশের। সে কারণে তিনি তড়িঘড়ি বিজেপির (BJP) সঙ্গ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।
নীতীশকে ইতিমধ্যেই সমর্থনের কথা জানিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস, সিপিআইএমএল, সিপিএম, সিপিআই। বিরোধী মহাজোটের নেতা হিসেবে আবারও উঠে আসে নীতীশের নাম। এর পরেই তিনি রাজভবনে সরকার গড়ার দাবি নিয়ে যান।
নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) এনডিএ জোট ছাড়ার ঘোষণার পরেই বদলে যায় বিহারের পরিষদীয় পাটিগণিতের হিসাব। জেডইউ এনডিএ ছাড়ার পরই বিহারের রাজনীতিতে ফের নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ল বিজেপি। আরজেডি-জেডিইউ-কংগ্রেস-বামেদের পাশাপাশি মঙ্গলবার ‘মহাগঠবন্ধনে’ শামিল হওয়ার কথা ঘোষণা করেছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতরাম মাঁঝির দল হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা (হাম)-ও।
২৪৩ আসনের বিহার (Bihar) বিধানসভায় গরিষ্ঠতা প্রমানের জন্য প্রয়োজন ১২২ জন বিধায়কের সমর্থন। মঙ্গলবারের হিসাব বলছে, বিজেপি বিরোধী শিবিরে রয়েছে অন্তত ১৬৪ জন। এঁদের মধ্যে নীতীশ ১৬৩ জনের সমর্থন পেতে পারেন। আরজেডির ৭৯, জেডিউ-র ৪৫, কংগ্রেসের ১৯ এবং ১৬ জন বাম বিধায়কের পাশাপাশি হাম-এর চার জনও রয়েছেন নীতীশের পাশে। এমনকি একমাত্র নির্দল বিধায়ক, বিজেপি-ঘনিষ্ঠ সুমিত সিংহের সঙ্গেও তাদের ‘যোগাযোগ’ রয়েছে বলে নীতীশের দলের দাবি। অন্যদিকে বিজেপির রয়েছে ৭৭ জন বিধায়ক। যার অর্থ ষষ্ঠ বার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন নীতীশ কুমার, দ্বিতীয়বার উপমুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন তেজস্বী যাদব। সম্ভবত বুধবার বিকাল ৪টেয় ইউপিএর (UPA) মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন নীতীশ কুমার।