পূর্বাঞ্চলে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি’র আসন কমানোর লক্ষ্যে এগোচ্ছে বিরোধীরা
বিহারে নীতীশ কুমার বিজেপি সঙ্গ ত্যাগ করার পর আপাতদৃষ্টিতে ছন্নছাড়া বিরোধী শিবির ফের অক্সিজেন পেয়েছে।
নীতীশ বলেছেন কেন্দ্রে বিরোধী দলগুলির মধ্যে সেতুবন্ধনে আগ্রহী তিনি। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনও আকাঙ্ক্ষা তাঁর নেই। পাশাপাশি আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব দেখা করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী এবং সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে। তিনি জানিয়েছেন, বিহারে নীতীশ যা করে দেখিয়েছেন, তা গোটা দেশেই করা সম্ভব। সমস্ত আঞ্চলিক দলগুলিকে এক সঙ্গে আসতে হবে। তেজস্বী বলেন, ‘‘বিজেপি আঞ্চলিক দলগুলিকে শেষ করতে চায়। কারণ তা হলে বিরোধী জোটই শেষ হয়ে যাবে। আর এই আঞ্চলিক দলগুলোই অনগ্রসর ও দলিত সমাজের প্রতিনিধিত্ব করছে।’’ এরই সঙ্গে তেজস্বী বলেন, জোট নেতৃত্বের বিষয়ে তিনি এখনই মাথা ঘামাতে চান না।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার এক সাংসদ বলেন, ‘‘বিহারের ঘটনা নিঃসন্দেহে বিজেপির কাছে বড় ধাক্কা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে দাঁড়িয়েই বলেছিলেন, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলি লড়াই করে মোদী-শাহকে রুখে দিতে সক্ষম। ফলপ্রকাশের পরে সব দল এক সঙ্গে আসবে।’’
পূর্বাঞ্চলে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির আসন কমানোর লক্ষ্যে এগোচ্ছে বিরোধী দলগুলি। জেডি(ইউ)-র জাতীয় সভাপতি লালন সিংহ-এর কথায় তা স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড এবং বিহার— পূর্বাঞ্চলের এই তিন রাজ্য মিলিয়ে বিজেপির অন্তত ৪০টি আসন কমানোর লক্ষ্য রয়েছে সংশ্লিষ্ট বিরোধী দলগুলির।
তৃণমূল শিবিরের বক্তব্য, ‘‘আমাদের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা বলছে, ২৪-এর লোকসভায় বাংলায় বিজেপি গত বারের তুলনায় অন্তত পনেরোটি আসন কম পাবে। এখন থেকেই জোটের নেতৃত্ব নিয়ে কথা বলা মানে আসলে বিজেপির হাত শক্ত করা। বরং যেখানে যে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ছে, তাকে নিশ্চিন্তে লড়তে দেওয়া কাম্য।’’
২০১৯ সালের ফলাফল অনুযায়ী, বিহারে ৪০টি আসনের মধ্যে ১৭, ঝাড়খণ্ডে ১৬টির মধ্যে ১১ এবং বাংলায় ৪২টির মধ্যে ১৮টি আসন রয়েছে বিজেপির। সেটা কমানোই এখন লক্ষ্য বিরোধী জোটের।
মহারাষ্ট্রে শিবসেনার ভাঙনের পর বিহারের পালা বদলের জেরে রাজনীতির হাওয়া এখন বিজেপি’র বিপরীতে বইছে। সব মিলিয়ে বিরোধী শিবির এখন বেশ চাঙ্গা।