কোন্নগর ও ক্যালিফোর্নিয়াকে মেলালো দুর্গাপুজো, সন্দীপের সৃষ্টিতে সাজছে প্রবাসীদের পুজোমণ্ডপ
বাংলার শিল্পকর্ম ফের পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে। কোন্নগর থেকে ক্যালিফোর্নিয়া পৌঁছচ্ছে সন্দীপ মুখোপাধ্যায়ের হাতে গড়া জিনিস। শারদোৎসবে সন্দীপবাবুর সৃষ্টিতেই সেজে উঠবে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রবাসীদের পুজোমণ্ডপ। কোন্নগরের মণ্ডপশিল্পী সন্দীপবাবুর আর বসে থাকার সময় নেই। দিনরাত কলকাতা-কোন্নগর করে চলেছেন, কখনও কোন্নগরে আবার কখনও কলকাতার কারখানায় ধীরে ধীরে পাটের মণ্ডপসজ্জা উপকরণগুলি রূপ পাচ্ছে।
কিন্তু এত আনন্দেও মিশে রয়েছে বিষাদ, নিজের হাতে মণ্ডপ সাজানো হবে না তার। সময়ের অভাবে তার যাওয়া হচ্ছে না। কিন্তু সন্দীপবাবুর (Sandeep Mukhopadhyay) পৌঁছে যাবে সুদূরে। মণ্ডপসজ্জার চূড়ান্ত কাজকর্ম ভিডিও কলিংয়ের মাধ্যমেই সারবেন শিল্পী। ফলে সন্দীপের আফসোস থেকেই যাচ্ছে। এখনও তিনি মণ্ডপসজ্জার কাজে ব্যস্ত, কোনরকম ত্রুটি রাখতে চাইছেন না শিল্পী।
সন্দীপের যাত্রা শুরু হয়েছিল পাড়া থেকেই, তারপর আস্তে আস্তে গোটা বাংলাজুড়ে তার কাজ পৌঁছেছে। মণ্ডপসজ্জার কাজ এনে দিয়েছে সুখ্যাতি। দু-মাস আগেই বিদেশ থেকে এবারই প্রথম প্রস্তাব পেলেন। দুপক্ষের সম্মতির পর কাজ শুরু করেন। কাজ করে চলেছেন সন্দীপ। তার কথায়, বিদেশে কাজের সুযোগ এসে যাওয়াটা তার কাছে অপ্রত্যাশিত। ভিসার সমস্যার কারণে তিনি নিজে যেতে পারছেন না বলেও জানিয়েছেন। মণ্ডপসজ্জার কাজ দুই সপ্তাহের মধ্যে কাজ শেষ করাই এখন সন্দীপের লক্ষ্য।
প্রসঙ্গত, ক্যালিফোর্নিয়ায় বাঙালিদের প্রতিষ্ঠান ‘বে এরিয়া প্রবাসী’, ১৯৭৪ সাল থেকে দুর্গা পুজো করে আসছে। সম্প্রতি দুর্গাপুজোকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। সেই বিষয়টিকে ভর করেই মণ্ডপ সাজিয়ে তুলছেন সন্দীপবাবু। মণ্ডপসজ্জার থিম ‘বিশ্বরূপেণ সংস্থিতা’। পাটের ও জৈব রং দিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। সহজে বহন করা যাবে, এমনভাবেই মণ্ডপসজ্জা তৈরি করা হচ্ছে। একটার পর একটা অংশ জুড়েই তৈরি হবে গোটা মণ্ডপ। জুড়ে দেওয়ার কৌশল পুজো উদ্যোক্তারাও শিখে নেবেন। বাঙালির হাতের তৈরি জিনিস সাগর পেরিয়ে পৌঁছবে বিশ্বের আঙিনায়। এইভাবেই বাংলা-বাঙালির ঐতিহ্য, শিল্প, কৃষ্টি বিশ্বের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যাবে।