পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের স্বচ্ছতায় জোর তৃণমূলের, নিচ্ছে কড়া পদক্ষেপ
আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি মানুষের কাছে ফিরিয়ে আনতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের পাশাপাশি প্রশাসনিক কাজেও স্বচ্ছতা আনতে তৎপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
জেলা সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত যেসব পদাধিকারীদের বিরুদ্ধে সামান্যতম অভিযোগও উঠেছে, তাঁরাই বাদ পড়ছেন। নতুন, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি সম্পন্ন নেতাকেই তুলে আনা হচ্ছে তাঁর জায়গায়। যেমন, কোচবিহার এবং নদিয়া উত্তর- শনিবার এই দুই সাংগঠনিক জেলা নতুন করে ঢেলে সাজিয়েছে শাসকদল। ব্লক, টাউন স্তরে বদলের পাশাপাশি জেলার শ্রমিক সংগঠনগুলিতেও বদল আনা হয়েছে। কোচবিহারের মোট ২২ টি ব্লক, টাউনে প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে কারা থাকছেন, তার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তৃণমূলের তরফে টুইট করে জানানো হয়েছে পদাধিকারীদের নাম।
অন্যদিকে, নবান্ন সূত্রের খবর, দু’দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের কাছে একটি স্পষ্ট নির্দেশ গিয়েছে। তাতে যা বলা হয়েছে, তার মর্ম হল—পঞ্চায়েতে চোর ধরো আর এফআইআর করো। শুধু তা নয়, যে টাকা চুরি হয়েছে তাও উদ্ধার করো।
রাজ্যে নব্বই শতাংশ পঞ্চায়েত তৃণমূলেরই দখলে। ফলে এই নির্দেশে পঞ্চায়েতে তৃণমূলের একাংশ নেতা-কর্মীর কপালে বিপদ ঘনাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, আরও একটি কথা এখানে প্রাসঙ্গিক। কদিন আগে একুশের মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, ‘তৃণমূল করে খাওয়ার জায়গা নয়। নেতা ধরে পঞ্চায়েতে টিকিট পাওয়া যাবে না’। অভিষেকের ওই হুঁশিয়ারি আর নবান্নের এই চিঠি পাশাপাশি রাখলে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে এবার পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের অনেকেই টিকিট পাবেন না। বিশেষ করে যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও টাকা লুঠের অভিযোগ রয়েছে তাঁদের নির্বিচারে বাদ দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসনকে নবান্ন যে চিঠি পাঠিয়েছে, তাতে মূলত দুটি প্রকল্পের ব্যাপারে হুঁশিয়ার করা হয়েছে। তার অন্যতম হল, একশ দিনের কাজ প্রকল্প। নোটিসে বলা হয়েছে, এই প্রকল্পের আওতায় গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত যাদের জব কার্ড দেওয়া হয়েছে, তাদের নাম অবিলম্বে জেলা পোর্টালে তুলতে হবে। এ ব্যাপারে পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, উত্তর দিনাজপুর, বাঁকুড়া, কোচবিহার, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূমকে সতর্ক করা হয়েছে।