‘সরকার সময়ে সিদ্ধান্ত নেয় না’’, মোদী সরকারের দিকেই কি আঙ্গুল তুললেন গড়করি?
সদ্য বিজেপি’র সংসদীয় বোর্ড থেকে নাম বাদ যাওয়ার পর আবার সংবাদের শিরোনামে নীতিন গড়করি। গত রবিবার মুম্বইয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের একটি অনুষ্ঠানে নীতিন বলেন, ‘‘নির্মাণক্ষেত্রে ভারতের ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল। কিন্তু সে জন্য প্রয়োজন, বিশ্বের ভাল প্রযুক্তি, ভাল উদ্ভাবন, ভাল গবেষণার দেশের মাটিতে সফল প্রয়োগ। মানের সঙ্গে আপস না করে খরচ কমাতেই হবে। এবং নির্মাণক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল সময়। সময়ই সবচেয়ে বড় পুঁজি। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, সরকার সময়মতো সিদ্ধান্ত নেয় না।’’
এরপরই জল্পনা শুরু হয়, তাহলে কি তিনি সরাসরি মোদী সরকারের দিকেই আঙুল তুললেন? এর আগেও আরএসএস (RSS) ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নীতিন (Nitin Gadkari) মোদী সরকারকে এবং বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। বিভিন্ন সময় দলক বিড়ম্বনায় ফেললেও নীতিন রয়ে গিয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরেই।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দলের প্রাক্তন সভাপতি এবং প্রবীণদের মধ্যে অন্যতম নেতা নীতিনকে সংসদীয় বোর্ড থেকে বাদ দেওয়ার অর্থ আগামী লোকসভা ভোটে তাঁর গুরুত্ব হ্রাসের সঙ্কেত। নীতিন গড়করির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) ‘মধুর সম্পর্কে’র কথা দিল্লির রাজনৈতিক মহলে বহুল চর্চিত। আরএসএস ঘনিষ্ঠ, নাগপুর ‘লবি’র নেতা গড়করির সঙ্গে মোদী-শাহ’দের সম্পর্ক খুবই তিক্ত। বিজেপি’র (BJP) অন্দরে গড়করি মোদী-শাহ’র বিরোধী বলেই পরিচিত। ফলে সংসদীয় কমিটি থেকে নীতিন গড়করি সরিয়ে কৌশলে নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করলেন মোদী-শাহ। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে বিপুল জয়ের পর সংসদীয় বোর্ড পুনর্গঠন করেছিলেন মোদী-শাহ। সে সময় দলের দুই প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী (Lal Krishna Advani) এবং মুরলীমনোহর জোশীকে (Murli Manohar Joshi) দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
ফলে এই পরিস্থিতিতে নীতিন গড়করির করা ‘‘সবচেয়ে বড় সমস্যা হল সরকার সময়ে সিদ্ধান্ত নেয় না’’ মন্তব্যটি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।