বিলকিস মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তি দেওয়া লজ্জাজনক, মত প্রবীণ বিজেপি নেতার
বিলকিস বানো মামলায় ভারতীয় জনতা পার্টি এখনও নীরবতা বজায় রাখলেও, দলের প্রবীণ নেতা এবং হিমাচল প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শান্ত কুমার (Shanta Kumar) ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের মুক্তির অনুমতি দেওয়ার জন্য গুজরাট সরকারের নিন্দা করেছেন।
“সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তির কথা শুনে আমি লজ্জায় মাথা নত করছি। এটি ছিল ইতিহাসের অন্যতম বর্বর ঘটনা। কোনও সরকার কিভাবে এই দোষীদের সাজা মকুফের অনুমতি দিতে পারে? গুজরাট সরকারের উচিত তার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা এবং মামলায় দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের ফাঁসি দেওয়া।” বাজপেয়ী সরকারের প্রাক্তন এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একথা বলেছেন।
শান্ত কুমার আরও বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) কাছে বিলকিস বানো মামলায় অভিযুক্তদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়ার আবেদনের জন্য যোগাযোগ করবেন।
বিলকিস বানো (Bilkis Bano) গণধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত ১১ জনকে মুক্তি দিয়েছে গুজরাত সরকার। গোধরার উপসংশোধনাগারে গত ১৫ বছর ধরে বন্দি ছিল সকলে। সোমবার মুক্তি পেয়ে তারা বেরিয়ে এসেছে। ২০০৮ সালে তাদের সকলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গুজরাত সরকারের শাস্তি মুকুবের মিয়ম অনুযায়ী, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার আবেদন করে দোষীরা। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই পনেরো বছর কারাবাসের পর সকলের শাস্তি মকুব হয়েছে।
প্রবীণ বিজেপি নেতা শান্ত কুমার বলেন, ‘‘এটা ‘লজ্জাজনক’, দেশ যখন স্বাধীনতার ৭৫ তম বার্ষপূর্তি পালন করছিল, তখন বিলকিস বানো মামলায় অভিযুক্তদের মুক্তি দেওয়ার ঘটনা ঘটল!’’
তিনি আরও বলেন, “যখন বিশেষ আদালত অপরাধের জন্য তাদের দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করে এবং উচ্চ আদালত তাদের ধর্ষণ এবং হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে, এর মানে এটি প্রমাণিত হয়েছে যে তারা ওই জঘন্য অপরাধ করেছে। আমি বিস্মিত যে এত জঘন্য অপরাধের পরেও তাদের ফাঁসি দেওয়া হয়নি। এখন, গুজরাট সরকার একটি বিশেষ বিধান ব্যবহার করে তাদের মুক্তি দিয়েছে জেনে আমি আরও অবাক হয়েছি।’’
জেল থেকে বেরনোর পরেই এগারোজন দোষীকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে মালা পরিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় সেই ছবি। সেখানে দেখা যাচ্ছে, গুজরাতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কার্যালয়ে মালা এবং তিলক পরে বসে আছে দোষীরা! যা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তাঁর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে ‘ফাঁপা দাবি’ করার জন্য আক্রমণ করেছে। বিজেপি অবশ্য এই বিষয়ে নীরবতা বজায় রেখেছে!