আবারও সংসদীয় ব্যবস্থায় আঘাত, বিরোধীদের কণ্ঠরোধে চালু হচ্ছে আচরণবিধি?
মোদী সরকারের ফ্যাসিবাদী দাপট চলছেই। সম্প্রতি শেষ হওয়া বাদল অধিবেশনের আগেই বিরোধী সংসদদের কণ্ঠরোধ করতে, অসংসদীয় শব্দের তালিকা প্রকাশ করেছিল মোদী সরকার। সংসদ সচিবালয় সূত্রে খবর, এবার লোকসভা-রাজ্যসভার বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে আগামী শীতকালীন অধিবেশন থেকেই নয়া আচরণবিধি চালুর কথা ভাবছে বিজেপি সরকার। বলাবাহুল্য বিশৃঙ্খলা রোখার নামে বিরোধীদের দমন করার উপায় খুঁজছেন শাহ-মোদী।
অধিবেশন চলাকালীন ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখান বিরোধী সাংসদেরা, এবার নয়া আচরণবিধিতে এই ওয়েলে নেমে পোস্টার-প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদের বিষয়টি চিরতরে বন্ধ করতে চাইছে মোদী সরকার। শোনা যাচ্ছে, সংসদের মর্যাদা রক্ষার সঙ্গে সঙ্গেই সাংসদেরা নিজেদের মত যাতে যথাযথ প্রকাশ করতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করতেই সরকার ও বিরোধী সাংসদের মতামত নিয়ে নয়া আচরণবিধির খসড়া তৈরি করা হয়েছে। অধিবেশন চলাকালীন সপ্তাহে অন্তত একটি করে দিন সাংসদদের নানান বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পেশের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে নয়া আচরণবিধিতে।
এবারের বাদল অধিবেশনে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখানোর কারণে, লোকসভার ও রাজ্যসভা মিলিয়ে ২৩ জন সাংসদকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। বিক্ষোভ ও বিশৃঙ্খলার কারণে দুই কক্ষেই অধিবেশন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে। প্রসঙ্গত, এবারের বাদল অধিবেশনের আগেই সাংসদদের কণ্ঠরোধ করেছে মোদী সরকার। অসংসদীয় শব্দের তালিকা বানিয়ে অধিবেশনে সেগুলির ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিল মোদী সরকার। ওই তালিকায় লজ্জাজনক, নির্যাতন, বিশ্বাসঘাতকতা, নাটক, দুর্নীতিগ্রস্ত, অযোগ্য, ভণ্ডামির মতো সাধারণ নিরীহ শব্দের পাশাপাশি নৈরাজ্যবাদী, শকুনি, স্বৈরাচারী, খলিস্তানি, বিনাশপুরুষ, তানাশাহির মতো শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। অর্থাৎ মোদীকে বিরোধীরা যা যা বলে আক্রমণ করে এসেছে, সেই সব শব্দের উপরেই নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। অসংসদীয় শব্দ ঘিরে চরমে পৌঁছেছিল বিতর্ক। বাদল অধিবেশনেই রাজ্যসভা সচিবালয় আরও একটি নির্দেশিকা জারি করে সংসদ চত্বরে ধর্না, অবস্থান বিক্ষোভ, অনশন এমনকি ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করার উপরেও নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল।