মমত্ব ও ভালবাসার প্রতিমূর্তি নীল-সাদা শাড়ি পরা মাদার
সৌভিক রাজ
এই পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী শব্দের নাম মা। কেবল গর্ভধারণ করলেই কি মা হওয়া যায়? জঠোর জ্বালা সহ্য না করেও তিনি মা। সকলের মা। ১৯১০ সালের ২৬ আগস্ট সুদূর ম্যাসিডোনিয়ায় তাঁর জন্ম হয়েছিল। কিন্তু তাঁর কর্মকান্ডের সাক্ষী থাকল বাংলাসহ গোটা বিশ্ব। মাত্র ১২ বছর বয়সে সন্ন্যাস ধর্মের গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। ১৮ বছর বয়সে তিনি গৃহত্যাগ করেন। আর্ত, অনাথ, দরিদ্র মানুষদের ভালবেসে তিনি মাদার হয়ে উঠেছেন। ১৯৩১ সালের ২৪ মে তিনি সন্ন্যাস ধর্মগ্রহণ করেন। ১৯৩৭ সালের ১৪ই মে থেকে টেরেসার জীবনে আমুল পরিবর্তন আসে। মহামারি আর ১৯৪৬-এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তাঁর জীবনকে বদলে দেয়। ১৯৪৮ সালে থেকেই ধর্মপ্রচারের কাজ শুরু করেন মাদার (Mother Teresa)। ভারতীয় নাগরিকত্ব নেন। ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো, রোগীর শুশ্রুসা, শিক্ষা-সেবা দানের মধ্যে দিয়েই তাঁর দিন যাপন চলতে থাকে।
১৯৫০-এর অক্টোবরে তিনি গড়ে তোলেন ‘মিশনারিজ অফ চ্যারিটি’। ১৯৫২ সালে আর্ত মানুষের চিকিৎসার জন্যে তৈরি করেন ‘নির্মল হৃদয়’। ১৯৭৯ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পান। ১৯৮০ সালে তিনি ভারতের সর্বোচ্চ পুরস্কার ভারতরত্নে ভূষিত হন। ২০১৬ সালে পোপ ফ্রান্সিস মাদারকে সেন্টু হুড অর্থাৎ সন্ত হিসেবে ভূষিত করেন।
১৯৮৩ সালে তাঁর প্রথম হার্ট অ্যাটাক হয়। দ্বিতীয়বার হৃদরোগ আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁর শরীর ভেঙে যায়। একই সঙ্গে নিউমেনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় শরীরের আরও অবনতি ঘটে। ১৯৯৭ সালের ১৩ মার্চ মিশনারিজ অফ চ্যারিটির পদ থেকে অব্যাহতি নেন। এরপর ১৯৯৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তিনি দেহত্যাগ করেন।