কংগ্রেস ছাড়ার পর আজাদকে ‘মোদীর গুলাম’ বলে কটাক্ষ
কংগ্রেসের সব পদ থেকে ইস্তফা দিলেন দলের বর্ষীয়ান নেতা গুলাম নবি আজাদ । শুধু সব পদ ছাড়াই নয়, কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আগে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে রীতিমতো বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন তিনি।
পাঁচ পাতার পদত্যাগপত্রে গুলাম নবি লিখেছেন, ‘গোটা সাংগঠনিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াই একটা প্রহসন। দেশের কোথাও সংগঠনের কোনও পর্যায়ের নির্বাচনই হয়নি।’ এর পরই কংগ্রেসের (Congress) প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীকে নিশানা করে বর্ষীয়ান নেতা লিখেছেন, ‘এই সব ঘটেছে, তার কারণ, গত আট বছরে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তিনি এক জন ‘অপরিণত’ ব্যক্তিত্ব।’ এমনকি, বিভিন্ন নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির জন্যও রাহুলকেই কার্যত কাঠগড়ায় তুলেছেন গুলাম।
গুলাম বরাবরই সুদর্শন ও দীর্ঘকায়। সাফারি শ্যুট পরেন এই কাশ্মীরি নেতাকে দেখতে বেশ লাগে। একদা জম্মু কাশ্মীরে কংগ্রেসের (Congress) সভাপতি ছিলেন তিনি। পরে ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী এবং মনমোহন সিং মন্ত্রিসভায় বড় পদে ছিলেন আজাদ। ফলে শুক্রবার সকাল ১১ টার সময়ে নয়াদিল্লির ২৪ নম্বর আকবর রোডের মাটিতে মৃদু কম্পন হল।
কয়েক দিন আগে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রচার কমিটি এবং রাজনৈতিক বিষয়ক প্যানেল থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন গুলাম নবি। ২০২০ সালের আগস্টে যে ২৩ জন নেতা সনিয়াকে চিঠি দিয়ে দলীয় নির্বাচন এবং স্থায়ী সভাপতি নিয়োগের দাবি জানিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন আজাদ।
গত বছর তিনেক ধরেই মোদী-অমিত শাহর সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখছেন আজাদ (ghulam nabi azad)। তার পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। তাঁকে পদ্মবিভূষণ দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ভারত জোড়ো যাত্রা শুরু করতে চলেছেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। ১২ টি রাজ্য মিলিয়ে ৩৭৫০ কিলোমিটার পথ যাত্রা করবেন তিনি। সেই যাত্রাকে দুর্বল করার জন্যই আজাদ দল ছাড়লেন বলে অভিযোগ কংগ্রেস নেতাদের। তাঁদের মতে, বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে এ সব করছেন আজাদ।
জয়রাম রমেশ, কেসি বেনুগোপাল বা অধীর চৌধুরীর মতো নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় খোলাখুলিই জানাচ্ছেন যে তার পর থেকে কংগ্রেসকে দুর্বল করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিলেন গুলাম নবি। তাঁর নেতৃত্বেই কংগ্রেসে জি-২৩ গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। এই গোষ্ঠীর কমবেশি সব সদস্যই আড়ালে আবডালে মোদী-শাহকে তোয়াজ করে চলেন। দুদিন আগে মোদীর সামনে দাঁড়িয়ে মণীশ তিওয়ারির লাজুক মুখের ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। শুক্রবার সকালের পর থেকে তাই কংগ্রেস নেতারা এখন প্রকাশ্যেই বলছেন, আজাদ এখন নরেন্দ্র মোদীর গুলাম হয়ে গিয়েছেন।