প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ১৮ মাসে ১০ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতির কী হল?
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। ১৮ মাসের মধ্যেই ১০ লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরি। কিন্তু তিন মাস অতিক্রান্ত হতে চলেছে, অথচ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পালনের প্রাথমিক ধাপটুকু পর্যন্ত পেরতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার।কোন মন্ত্রকে কত শূন্যপদ কিংবা ১৮ মাসের মধ্যে কতগুলি পর্যায়ে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে, সেব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও ঝুলে। কারণ, সব মন্ত্রকের পক্ষ থেকে মোট শূন্যপদ অথবা তা পূরণের পরিকল্পনা পাঠানো হয়নি। ফলে পূর্ণাঙ্গ তালিকা এখনও বিশ বাঁও জলে।
বিগত বছরগুলিতে যেহেতু নিয়োগের পরিমাণ ছিল প্রায় তলানিতে, তাই শূন্যপদের সংখ্যা বেড়েছে দ্রুত। আর তারই মধ্যে এসেছে করোনাকাল। ২০২০ থেকে ২০২১ সালের সময়সীমায় নিয়োগ প্রক্রিয়া স্তব্ধ ছিল। এমনকী পরীক্ষা হয়েও ইন্টারভিউ হয়নি। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে পরীক্ষার তারিখ বারংবার পিছিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই ১০ লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারি নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে। সেক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন, পরীক্ষা, ইন্টারভিউ, মেডিক্যাল, ফলপ্রকাশ ইত্যাদি বহু স্তর। অথচ যত দ্রুত সেই প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করার কথা ছিল, সেই তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিকা এসেছিল জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে। তারপর একমাস লেগে যায় শুধু উচ্চপর্যায়ের টাস্ক ফোর্স তৈরি করতে। কীভাবে এই ১০ লক্ষ সরকারি চাকরির নিয়োগ হবে, সেই কাজে সমন্বয়ের জন্য একঝাঁক মন্ত্রক নিয়ে জুলাই মাসের মাঝামাঝি সেটি গঠিত হয়। সেই টাস্ক ফোর্স নির্দেশিকা পাঠিয়েছিল প্রতিটি মন্ত্রককে—মোট শূন্যপদ এবং কতগুলি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যেতে পারে তার তালিকা ও সুপারিশ সংবলিত রিপোর্ট তৈরির জন্য। সবথেকে বিস্ময়কর হল, টাস্ক ফোর্স জানতে পেরেছে রেল, ডাক, সামরিক বিভাগ (প্রশাসন) এবং রাজস্ব সংক্রান্ত মন্ত্রকে শূন্যপদের সংখ্যা সর্বাধিক। অথচ স্বাধীনতার পর থেকে ভারত সরকারের এই চারটি ক্ষেত্রেই সবথেকে বেশি নিয়োগ হয়ে এসেছে। এর অর্থ একটাই, বিগত কয়েক বছরে এই বিভাগগুলিতে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম নিয়োগ হয়েছে।