স্তুতির চোটে সভারকার উঠলেন বুলবুলির ডানায়, কর্নাটকের পাঠ্যসূচীতে আজগুবি গপ্পো
কথায় বলে, গল্পের গরু গাছে ওঠে। বিজেপি সাভারকর (VD Savarkar) ভক্ত তৈরির নেশা গোটা সভারকারেরই বুলবুলির ডানায় তুলে দিল! অবাক হলেই ইহাই সত্য। সেলুলার জেরে বন্দি ছিলেন বিনায়ক দামোদর সাভারকর। তার সেল নিশ্চিদ্র ছিল কিন্তু তা সত্ত্বেও নাকি একটি বুলবুলি চলে আসত সভারকারের সেলে। প্রতিদিন সেই বুলবুলির ডানায় বসেই নাকি মাতৃভূমি পরিদর্শনে বেরোতেন সাভারকর। এই ডানায় করে ভ্রমণের কাহিনীই স্থান পেয়েছে বিজেপির ডবল ইঞ্জিন রাজ্য কর্ণাটকের অষ্টম শ্রেণির পাঠ্য বইতে। ছাত্রছাত্রীদের তা পড়ানোও হচ্ছে।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে সরব বিরোধীরা। যদিও মোদী আমলে এমন ইতিহাস বিকৃতি বারংবার হয়েছে। পাঠ্য পুস্তক, পাঠ্যক্রম তার সাক্ষী থেকেছে। কর্ণাটকের পাঠ্যপুস্তক (Karnataka Text Book) পর্যালোচনা কমিটি হাইস্কুলের পাঠ্যসূচীতে সাভারকর সম্পর্কে একটি অধ্যায় যোগ করেছে। সেই অধ্যায় নিয়েই শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। যদিও কর্ণাটকের স্কুল শিক্ষা ও স্বাক্ষরতামন্ত্রী বিসি নাগেশের দাবি, লেখক নাকি সত্য তুলে ধরেছেন। প্রসঙ্গত, এর আগে সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলিরাম হেগড়েওয়ারের একটি বক্তব্য পাঠ্যসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে তুমুল বিতর্ক বেঁধেছিল।
অষ্টম শ্রেণির কানাডা-২ পাঠ্যবইতে ‘রক্তের গ্রুপ’ শীর্ষক একটি অধ্যায় বদলে কেটি গেট্টির ‘কলাভানু গেদাভারু’ নামে একটি ভ্রমণ কাহিনী যুক্ত করা হয়েছে। ওই গল্পেই সাভারকারকে বুলবুলির ডানায় চাপিয়েছেন লেখক।
দেশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে বিনায়ক দামোদর সাভারকরের ভূমিকা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। যা রাজনৈতিক বিরোধীতার পর্যায়তেও পৌঁছেছে। সাভারকরকে নিয়ে ঢালাও প্রচার চালায় বিজেপি এবং সঙ্ঘ (RSS)। জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ব্রিটিশ সরকারের কাছে সভারকারের লেখা মার্সি পিটিশন নিয়েও কম জল ঘোলা হয়নি। মোদী লালকেল্লা থেকে স্বাধীনতা দিবসের দিন একই সঙ্গে গান্ধীজি, নেতাজি ও সভারকারের নাম নিয়েছিলাম, তা নিয়েও জোর বিতর্ক চলেছে। এরমধ্যেই বিজেপি শাসিত কর্ণাটক সরকারের সাভারকার স্তুতি করতে এহেন একটি আজগুবি গপ্পো পাঠ্যসূচীতে নিয়ে এল। যা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে। এই কাহিনী থেকে পড়ুয়ারা কী শিখবে? সেই প্রশ্নে সরব শিক্ষাবিদদের একাংশ।