স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে দুর্নীতি রুখতে আরও কড়া রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন
বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে দুর্নীতি রুখতে আরও কড়া হচ্ছে রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনের। দেখা যাচ্ছে, বেসরকারি হাসপাতাল যে অঙ্কের বিল পাঠাচ্ছে, তার সঙ্গে বাস্তবের কোন সামঞ্জস্য নেই। রোগ ভর্তি থেকে শুরু করে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া, ইত্যাদি নানান ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন রোগীরা। এইসব সমস্যার কথা জানতেই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য। সমস্যা সমাধানে ‘ম্যান্ডেটরি সিগনেচার অফ ডক্টর ইন ব্লকিং অ্যান্ড ডিসচার্জ’ নামে ইতিমধ্যেই এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন। সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতাল সেই সঙ্গেই দুটি টিপিএ সংস্থাকেও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছে রাজ্য।
আধিকারিকদের দাবি, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে রোগী অস্ত্রোপচার করছেন জুনিয়র ডাক্তার, কিন্তু ছুটির সময় স্বাক্ষর করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধান। আবার বেশ কিছু জায়গায় দেখা গিয়েছে, রোগীর ছবি, সই থাকলেও ডাক্তারের স্বাক্ষর নেওয়া হয় না। আদপে অস্ত্রোপচার কোন চিকিৎসক করছেন তা জানা যায় না। সেক্ষেত্রে মেডিকো লিগ্যাল সমস্যা হলে সমাধানের আর উপায় থাকে না। নয়া নিয়ম চালু হলে বেসরকারি হাসপাতাল চিকিৎসকেরা তার সুফল পাবেন। বেসরকারি হাসপাতালগুলি চিকিৎসকদের কম পারিশ্রমিকও দিতে পারবে না।
রোগীর ছবির পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের স্বাক্ষর ও মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর থাকা বাধ্যতামূলক, নয়তো স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের মাধ্যমে বকেয়া টাকা পেতে সমস্যায় পড়তে হবে। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় চিকিৎসা করালে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ তো আগে থেকেই ছিল। কয়েকজন রোগী অভিযোগ করেন, চিকিৎসা করছেন এক ডাক্তার, কিন্তু বিল হচ্ছে অন্য ডাক্তারের নামে। আবার কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, ডাক্তার এক প্যাকেজ লিখছেন কিন্তু হাসপাতাল থেকে সরকারের কাছে যাচ্ছে আরেক প্যাকেজ। নয়া নিয়ম বলবৎ হলে, স্বাস্থ্যসাথীর ক্ষেত্রে যাবতীয় দুর্নীতি রুখে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এবার থেকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে চিকিৎসা হলে; সরকারের থেকে চিকিৎসার খরচ পাওয়ার জন্যে, রোগী কোন প্যাকেজের আওতায় পড়ছেন সেই প্যাকেজ ব্লকিং স্লিপ এবং ডিসচার্জ স্লিপ হাসপাতালগুলিকে স্বাস্থ্য ভবনের পোর্টালে আপলোড করতে হবে। রোগী যে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করিয়েছিলেন, ছুটির স্লিপে সেই ডাক্তারকেই স্ট্যাম্পসহ স্বাক্ষর করতে হবে। অন্যথায় টাকা পাওয়া যাবে না।