কৈলাসের সুরে সুর মিলিয়েই দল ভাঙানোর ডাক সুনীলের, ক্ষোভ বাড়ছে BJP-র অন্দরে
বাংলা দলের শক্তির উপর আর ভরসা করতে পারছে না বিজেপি, তাই ফের একবার পুরনো অস্ত্রকেই ব্যবহার করতে চলেছে বাংলার গেরুয়া শিবির। অন্য দল থেকে কর্মীদের ভাঙিয়ে এনে, ফের সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধির কৌশল নিতে চলেছে রাজ্য বিজেপি! বৈদিক ভিলেজে প্রশিক্ষণ শিবিরের দ্বিতীয় দিনে ৩০ আগস্ট এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির নতুন পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল। এই মন্তব্যকে ঘিরেই দলের অভ্যন্তরে নতুন করে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপির তৎকালীন পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, তৃণমূল ও অন্যান্য দল ভাঙানোর ডাক দিয়েছিলেন। আর এবার সেই কৈলাসের জুটোতেই পা গলালেন নবনিযুক্ত পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল। তার গলায় কৈলাসের সুর মিলতেই গোটা গেরুয়া শিবিরের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের বক্তব্য, দল ভাঙার খেলায় বিজেপি সর্বত্র ঘুরপথে পিছন দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে তারা দল ভাঙার খেলায় সফল হয়েছে। দিল্লি, ঝাড়খণ্ড এবং বাংলায় একইভাবে দল ভাঙানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি!
বৈদিক ভিলেজে প্রশিক্ষণ শিবির নিয়ে দলের অন্দরেই রয়েছে আসন্তোষ। বিজেপির পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ শিবিরে সকালে যোগব্যায়ামের সময় সকলের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক বলা হলেও, কেবল ৫০ শতাংশ সদস্যই উপস্থিত ছিলে। জানা যাচ্ছে, সাতসকালে অনেকেই ঘুম থেকে উঠতে পারেননি। শিবিরে রাত্রিবাস বাধ্যতামূলক থাকলেও, কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় বিজেপি নেতা রাতে ছিলেনই না। যেমন, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সাংসদ সৌমিত্র খাঁ শিবিরে রাত্রিবাস করেননি। এই বৈষম্যমূলক নিয়ম পালনকে ঘিরে ইতিমধ্যেই অনেক প্রতিনিধিই প্রশ্ন তুলেছেন।
প্রসঙ্গত, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের বাংলায় দল ভাঙানোর খেলায় বিজেপি দাপট দেখালেও, আদপে সাফল্য আসেনি। শাহ-নাড্ডাদের বাংলা জয়ের স্বপ্নের অকালমৃত্যু হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে হারের পর থেকেই দল ভাঙানোর কৌশল ও যোগদান মেলা নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিল। পরবর্তীতে দল ভাঙানোর খেলা তাদের দিকেই ঘুরে এসেছে। যোগদান মেলা রীতিমতো উল্টে গিয়েছে, বুমেরাংয়ের মতো ফিরেছে গেরুয়া শিবিরে। দলবদলুদের নেওয়া নিয়ে বিজেপির অন্দরে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছিল। কোন্দলও মারাত্মক পর্যায়ে চলছে, আদি-নব্যে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল দল। সেই আদি-নব্য দ্বন্দ্ব আজও চলছে।
এর মধ্যে বনশলের বার্তা, নতুন কেউ বিজেপিতে এলে তাকে বড় আসন দিতে হবে। অন্য দল থেকে আসা নেতাদের বেশি করে জায়গা দিতে হবে। যা ঘিরে বিজেপি নেতারা ক্ষুব্ধ, এই ক্ষোভের ফলে রাজ্য বিজেপির অন্দরে ক্রমশ আসন্তোষ বাড়ছে।