UNESCO-কে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মঞ্চে তপতীকে সংবর্ধনা, বিতর্কে জল ঢেলে দিলেন মমতা
কলকাতার দুর্গাপুজোকে আবহমান ঐতিহ্যের শিরোপা দিয়েছে ইউনেস্কো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানাতে একটি মিছিলের আয়োজন করেছে রাজ্য সরকার। তার পর থেকেই বিরোধীরা বিশেষ করে বামেরা তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করতে শুরু করে। তাদের অভিযোগ, আদতে এই বিরাট স্বীকৃতির নেপথ্যে রয়েছে অধ্যাপিকা তপতী গুহঠাকুরতার অবদান। অথচ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি তাঁকে কৃতিত্ব না দিয়ে এই স্বীকৃতির কতিত্ব নিজেই নিচ্ছেন। যা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সব বিতর্কের অবসান ঘটল রেড রোডে ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের অনুষ্ঠান মঞ্চে। এদিনের অনুষ্ঠানে তপতী গুহঠাকুরতাকে আমন্ত্রণ জানান মুখমন্ত্রী। শুধু আমন্ত্রণ জানানোই নয়, ইউনেস্কো প্রতিনিধিদের মতো তাঁকেও সম্মাননা জ্ঞাপন করলেন মমতা। অনুষ্ঠান শেষে তপতী দেবী সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেন, ‘‘আমার স্বীকৃতি অন্য কেউ কেড়ে নিয়েছেন, এটা বলা ঠিক নয়। কারণ আমরা যে এই কাজটি করেছি, তা যাঁদের জানার কথা, দুর্গাপুজো কমিটি থেকে শিল্পীরা সকলেই তা জানেন। বাংলার সরকার বিষয়টি জানত না, এটাও ঠিক নয়। কারণ আজ দ্বিবেদী সাহেব যেই পদে রয়েছেন, সেই সময় ওই পদে ছিলেন অর্চিবাবু। তাঁর কাছে গিয়েছিলাম আমরা। ওঁর অনুমোদন পেয়েছিলাম।’’
তাঁকে নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে তপতী দেবী বলেন, ‘‘কৃতিত্বের প্রশ্ন উঠবে কেন? যাঁরা প্যান্ডেল বাঁধার কাজ করেন, তাঁরা থেকে রাজ্য সরকার, কলকাতা পুলিশ, সকলেরই অবদান রয়েছে। সরকারের অবদান রয়েছে কারণ সরকার একভাবে বিষয়টিকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। সিল্পীদের কথা বেশি করে বলব। তাঁরাই বাংলার পুজোকে এই নান্দনিক জায়গায় নিয়ে এসেছেন।’’
তপতী গুহ ঠাকুরতা প্রেসিডেন্সির কলেজের প্রাক্তন ছাত্রী, অধ্যাপিকা, গবেষক। বছর পঁয়ষট্টির তপতীদেবী ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সের সঙ্গে যুক্ত। বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব নিয়ে তাঁর লেখা বই হয়ত পড়েছেন অনেকেই। কিন্তু তপতীদেবীর গবেষণা যে আরও অনেক গভীরে, তা বোধহয় জানতেন না কেউ। ২০১৫ সালে প্রফেসর তপতী গুহ ঠাকুরতা একটা বই প্রকাশ করেন, যার নাম “In the Name of the Goddess: The Durga Pujas of Contemporary Kolkata”। বইটি সম্পূর্ণ গবেষণাভিত্তিক একটা কাজ। বইয়ে লেখা ভূমিকা থেকে জানা যায়, ২০০২ থেকে তিনি তাঁর সহকর্মী এবং বন্ধু অঞ্জন ঘোষের সঙ্গে একটা জয়েন্ট প্রজেক্ট হিসাবে কলকাতার দুর্গাপুজো নিয়ে কাজ করা শুরু করেন। এবং অবশেষে ২০১৫-তে এই বইটা প্রকাশ করতে পারেন।