কয়লা বা গরুপাচার কেলেঙ্কারি আসলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কেলেঙ্কারি, বললেন অভিষেক
শুক্রবার কলকাতায় ইডি দপ্তরে হাজিরা দিয়েছেন অভিষেক। সকাল পৌনে ১১ টা নাগাদ সেখানে পৌঁছেছেন তিনি। ইডি দপ্তরে থাকার সময়ই স্বস্তির খবর পান অভিষেক। দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও চরম পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। অর্থাৎ তাঁকে গ্রেপ্তার কার বা আটক করা যাবে না।
এদিন প্রায় সাত ঘণ্টা ইডির জিজ্ঞাসাবাদের পর বেরিয়ে এসে অভিষেক কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার কিছুক্ষণ পর হেঁটে সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরোন অভিষেক। তার পর মাইক হাতে নিয়ে রণং দেহি মূর্তিতে দেখা যায় ডায়মন্ড হারবারের সাংসদকে।
অভিষেক বলেন, কয়লা কেলেঙ্কারি, বা গরুপাচার কেলেঙ্কারি বলে কিছু নেই। এ সবটাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কেলেঙ্কারি। রাজনৈতিকভাবে বিরোধীদের মোকাবিলা না করতে পেরে এজেন্সি দেখিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দাবি, অমিত শাহ চান বিরোধী শূন্যভাবে সব দখল করতে। আর তাতে সবচেয়ে বড় বাধা তৃণমূল কংগ্রেস। সেকারণেই তাঁকে এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। তৃণমূল নেতার প্রশ্ন, শুধু যেসব রাজ্যে বিরোধীদের সরকার আছে, সেই রাজ্যগুলিতে ইডি-সিবিআইয়ের হানা কেন? গুজরাটে কেন সিবিআই হানা হয় না। বিহারে এতদিন বিজেপির সরকার ছিল, সেখানে এতদিন সিবিআই হানা হত না, এখন কেন হচ্ছে?
পাশাপাশিই অমিত শাহর পুত্র, বিসিসিআইয়ের সচিব জয় শাহের সাম্প্রতিক জাতীয় পতাকা হাতে না নেওয়ার ছবি আরও এক বার মনে করিয়ে দিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কটাক্ষ, ‘‘বাড়ির ছেলেকে দেশপ্রেম শেখাতে পারে না! তার খালি একটাই কাজ, ঘোড়ার মতো বিধায়ক কেনাবেচা করে সরকার পাল্টানো!’’
অভিষেক দাবি করেন, কয়লা পাচারের টাকা ঢুকেছে অমিতের পকেটে। তাঁর কথায়, ‘‘গরু পাচার হয় কী করে? বর্ডারের দায়িত্বে কে? এই টাকা তো সরাসরি অমিত শাহের কাছে গিয়েছে! সরাসরি বিজেপি নেতাদের কাছে গিয়েছে। এটা গরু বা কয়লা কেলেঙ্কারি নয়। এটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেলেঙ্কারি!’’ পাশাপাশি, অভিষেক বলেন ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় ‘পাপ্পু’ অমিত শাহ। কংগ্রেসের নেতা রাহুল গাঁধীকে বলা কটাক্ষ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফিরিয়ে দিলেন অভিষেক।
অভিষেকের কথায়, ‘‘আমায় যত বার ইডি ডেকে পাঠিয়েছে, আমি সহযোগিতা করেছি। আগেও দু’বার তদন্তের সম্মুখীন হয়েছি। এবার আদালতের রায়ের জন্য দিল্লিতে না-ডেকে কলকাতায় ডেকে পাঠিয়েছে। আমি তাতেও তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করলাম।’’ এরই পাশাপাশি তরুণ সাংসদের দাবি, ‘‘দিল্লি থেকে লোক এসেছে কলকাতায় জেরা করতে। এটাই তো নৈতিক জয়!’’
সম্প্রতি এনসিআরবির এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, দেশের মধ্যে কলকাতা যেখানে সবচেয়ে নিরাপদ শহর, সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আওতায় থাকা রাজধানী দিল্লিতে অপরাধের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরে এদিন অভিষেক বলেন,”অমিত শাহর লজ্জা হওয়া উচিত। দিল্লির প্রশাসনও সামলাতে পারেন না, আবার নিজের ছেলেকেও দেশপ্রেম শেখাতে পারেন না।”