নিয়োগ কমিটির অনুমতি ছাড়া স্থায়ী বা অস্থায়ী কোনও ধরনের নিয়োগই চলবে না, নির্দেশ মমতার
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বুধবার প্রশাসনিক পর্যালোচনায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দপ্তরের মন্ত্রী-সহ পদস্থ আধিকারিকরা। এই বৈঠকে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের সতর্ক করেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যকে না জানিয়ে পুরসভায় নিযুক্ত অস্থায়ী কর্মীদের বেতনের দায়ভার বহন করবে না রাজ্য সরকার। তাদের বেতন মেটাতে হবে পুরসভাগুলিকেই। ইতিপূর্বে নিয়োগ কমিটির সুপারিশ ছাড়াই বহু পদে নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। এমনকী, সুপারিশ কমিটির সদস্যরাও গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাই এবার স্থায়ী বা অস্থায়ী যে কোনও নিয়োগে কোনও ফাঁক রাখতে রাজি নন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, ভূমি থেকে রাজস্ব বৃদ্ধিরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মমতা জানিয়েছেন, নিয়োগ কমিটির অনুমতি ছাড়া স্থায়ী বা অস্থায়ী কোনও ধরনের নিয়োগই চলবে না। নিয়োগের আগে অর্থদপ্তরকে জানাতে হবে। জানাতে হবে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরকেও। আগে নিয়োগ করে তারপর অর্থদপ্তরকে জানানো চলবে না। অর্থাৎ এবার সবধরনের নিয়োগ সম্পর্কে হিসেব রাখতে চাইছে রাজ্য সরকার। যাতে ভবিষ্যতে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ এড়ানো যায়।
এদিনের প্রশাসনিক বৈঠকে এও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে সরকারের কোনও স্তরে কোনও চুরি বা ভুয়ো খরচ বরদাস্ত করা হবে না। কোনও টেন্ডারকে ভাঙা যাবে না। ছোট কাজ হলেও ই-টেন্ডারের মাধ্যমে কাজের বরাত দিতে হবে।
নবান্ন (Nabanna) সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর সচিবালয় থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত—কোনও অভিযোগই যেন ফাইল চাপা পড়ে না থাকে। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে কোনও অভিযোগ এলে সাত দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। একইভাবে পঞ্চায়েত বা জেলা পরিষদ স্তরে কোনও অভিযোগ এলে তা সময়ের মধ্যে সমাধান করতে হবে। প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েতের কাজের উপর দেখভাল করার জন্য এখন জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমা শাসক ও বিডিওদের রুটিন বেঁধে দিয়েছে নবান্ন। মাসে কাকে কোথায় ও কতবার যেতে হবে, কাজের হিসাব কীভাবে চাইতে হবে তাও বলে দেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি পুলিশ বিভাগকেও আরও সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একাধিক ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বাগুইআটির জোড়া খুনের ঘটনায় বিরোধীদের নিশানায় পুলিশ। এদিন মুখ্যমন্ত্রীও পুলিশ-প্রশাসনের সমন্বয় বৃদ্ধির নির্দেশ দেন। জেলাশাসকদের নিয়মিত বৈঠক করার নির্দেশও দেন তিনি।