বেসরকারি ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনাই সর্বাধিক, কোন স্বার্থে বেসরকারিকরণের পথে মোদী সরকার?
ব্যাঙ্ক বিক্রি করে দিয়ে কোষাগার ভরাতে ব্যস্ত মোদী সরকার। অন্যদিকে, ক্রমাগত ব্যাঙ্ক জালিয়াতির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বেসরকারি ব্যাঙ্কের জালিয়াতির শিকার হন সাধারণ মানুষ। দিন দিন সংখ্যাটা ক্রমেই বাড়ছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত ৬ বছরে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কেই এখন অবধি ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৬৬৫টি জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে, সরকারি ব্যাঙ্ক যেমন ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া, ব্যাঙ্ক অব বরোদা, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া বা সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার মতো সরকারি ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে জালিয়াতির সংখ্যাটা বিগত ছয় বছরে কোথাও মাত্র ৫৫৫, আবার কোথাও ৭৩৭।
সরকারি ব্যাঙ্কের মধ্যে স্টেট ব্যাঙ্ককেই সবচেয়ে বেশি জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। ৬ বছরে প্রায় ১৮ হাজার ৯৪২টি জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। তা সত্ত্বেও বেসরকারি ব্যাঙ্কের তুলনায় কম। এসবের পরেও একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে বেসরকারি হাতে তুলে দিচ্ছে মোদী সরকার। অর্থ বাজেটে রয়েছে দেদার বেসরকারিকরণের ঘোষণা।
যা খবর, আপাতত দুটি সরকারি ব্যাঙ্ক বিক্রি করা হবে। নীতি আয়োগ আরও দুটি ব্যাঙ্কের নাম প্রস্তাব করেছে। সেগুলি হল সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক। মনে করা হচ্ছে হিমাচল ও গুজরাত বিধানসভা নির্বাচন মিটিয়েই ব্যাঙ্ক বিক্রির সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে সংসদে সংশোধনী বিল আনতে পারে মোদী সরকার।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বলছে, নানা ক্ষেত্রে অসম্পূর্ণ তথ্য, কেওয়াইসি পূরণ না করা, বা ব্যাঙ্কের নাম করে তথ্য হাতিয়ে নেওয়া, না জেনে গ্রাহকদের গোপন তথ্য দিয়ে দেওয়ার ফলেই দিন দিন জালিয়াতির সংখ্যা বাড়ছে। বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিতেই সর্বাধিক জালিয়াতি হচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, সরকারি ব্যাঙ্কে জালিয়াতির পরিমাণ অনেক কম। বলাবাহুল্য, সরকারি ব্যাঙ্কেই সাধারণ মানুষের টাকা সবচেয়ে নিরাপদ। কিন্তু এরপরেও সরকারি ব্যাঙ্কগুলি বিক্রির পথে হাঁটছে মোদী সরকার। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে কার স্বার্থে সরকারি ব্যাঙ্ক বিক্রি করে মানুষকে জালিয়াতির শিকার করতে চাইছে মোদী সরকার?