নবান্ন অভিযানের পর দলের শীর্ষ নেতৃত্বদের নিয়েই একধিক প্রশ্ন বিজেপি’র অন্দরে
মঙ্গলবার বিজেপি’র নবান্ন অভিযানের পর দলের অন্দরেই নানা মত। দলের নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক প্রশ্ন তুলছেন দলেরই একাংশ।
যেমন, মঙ্গলবার পুলিশের জল কামান-কাঁদানে গ্যাসের শেলের বিরুদ্ধে রাজপথে যখন লড়াই করছেন বঙ্গ বিজেপি’র কর্মী, নেতারা। তখন কলকাতা থেকে অনেক দূরে গ্যালারিতে রয়েছেন সুনীল, অমিত, মঙ্গলরা। বিজেপি’র ‘সাইবার গুরু’ অমিত কেবল গুচ্ছ টুইট করেই দায় সেরেছেন (তাঁর করা টুইট নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে)। বঙ্গ বিজেপি’র একাংশ ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় জানিয়েছেন, ওঁদের আসতে বারণ করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, আপনারা পরামর্শ দিন। কিন্তু কর্মসূচিতে আসতে যাবেন না। কারণ, এই মাটি সম্পর্কে আপনাদের কোনও সাম্যক ধারণা নেই। আসলে নবান্ন অভিযানে বিজেপি’র বঙ্গ ব্রিগেড দিল্লিকে সম্ভবত বলতে চাইল, আপনারা অতিথি শিল্পী।
এতো গেল দিল্লির নেতাদের নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের মনোভাব। কিন্তু বিজেপি’র বঙ্গ নেতৃত্বকে নিয়ে দলের অন্দরে কী প্রতিক্রিয়া? নবান্ন অভিযানে বিজেপির নিচুতলার কর্মীরা যখন পুলিশের জলকামানের সামনে দাঁড়িয়ে ইট ছুঁড়ছেন, তখন দলের শীর্ষ নেতারা কেউ হাসছেন। কেউ চেয়ারে হেলান দিয়ে আয়েশে গা এলিয়ে বসে রয়েছেন। কেউ চুমুক দিচ্ছেন চায়ের কাপে। কারও হাতে আবার ঠান্ডা পানীয়ের বোতল। এমনই কিছু ছবি প্রকাশ্যে আসার পর, যা নিয়ে দলের অন্দরেই ক্ষোভ বাড়ছে।
দলের কর্মী এবং নিচুতলার নেতারা যেখানে বিনা যুদ্ধে ময়দান ছাড়তে রাজি হননি, সেখানে অধিকাংশ নেতাই স্রেফ নাম কা ওয়াস্তে পথে নেমে কার্যত স্বেচ্ছায় গ্রেপ্তারি বরণ করেছেন। শুভেন্দু অধিকারী তো মিছিল পর্যন্ত পৌঁছানোর আগেই পুলিশের হাতে ধরা দেন। দিলীপ ঘোষকেও সেভাবে পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে গিয়ে লড়াই করতে দেখা যায়নি। রাহুল সিনহা, লকেট চট্টোপাধ্যায়রা পথে নামলেও লড়াইয়ের ময়দানে ছিলেন না কেউই। এসব নিয়ে কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছিলই। এবার সেই ক্ষোভে ঘৃতাহুতির কাজ করল লালবাজারের অন্দর থেকে প্রকাশ্যে আসা কয়েকটি ছবি। যাতে দেখা যাচ্ছে শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চট্টোপাধ্যায়রা রীতিমতো খোশমেজাজে আড্ডা দিচ্ছেন। অনেকটা অবসর সময়ে বন্ধুদের আড্ডার মতো চা, ঠান্ডা পানীয় সহযোগে খোশগল্প চলছে। আর এই ছবিগুলি প্রকাশ্যে আসতেই কর্মীদের মধ্যে বাড়ছে ক্ষোভ। নিচুতলা থেকে প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়েছে, সাধারণ কর্মীরা যখন জঙ্গি আন্দোলন করছেন, তখন নেতারা এত নিশ্চিন্তে বসে থাকেন কী করে?