এআইসিসি’র সভাপতি গান্ধী পরিবারের থেকেই না কী অ-গান্ধী কেউ?
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে পরপর দু’বার কংগ্রেসের (AICC) ভরাডুবির পর রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। সোনিয়া গান্ধী ফের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি হিসেবে দলের লাগাম ধরেন।
এআইসিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, দলীয় সভাপতি পদের জন্য নির্বাচনের দিন ঠিক করা হয়েছে ১৭ অক্টোবর। নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন ধার্য করা হয়েছে ২৪-৩০ সেপ্টেম্বর। ফলে জাতীয় রাজনীতিতে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে, জাতীয় কংগ্রেসের সর্বভারতীয় পদে কে নির্বাচিত হবেন?
রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)
ফের রাহুল গান্ধীই দলের সভাপতি পদের দায়িত্ব নিতে রাজি হবেন? যদিও কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, রাহুল গান্ধী তার অবস্থানে অটল রয়েছেন যে তিনি অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির (AICC) সভাপতি হবেন না।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রা (Priyanka Gandhi Vadra)
অনেকেই তাঁর নামও ভাসিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু এই সম্ভাবনা খুব একটা দেখছেন না কংগ্রেসেরই একাংশ। তাঁদের মতে যেহেতু প্রিয়াঙ্কা উত্তর প্রদেশের কঠিন দায়িত্ব নিয়ে সে ভাবে সাফল্য এনে দিতে পারেন নি, বরং দল চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছে। সেই দায়ভার তাঁর উপর অবশ্যই বর্তায়।
মল্লিকার্জুন খড়গে (Mallikarjun Kharge)
খড়গে রাহুল গান্ধীর আস্থাভাজন বলে পরিচিত এবং আগামী কর্ণাটক নির্বাচনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
সব মিলিয়ে কংগ্রেসের সভাপতি কে হবেন তা নিয়ে নানা ধরনের জল্পনা চলছে। এবং এটা স্পষ্ট দলের শীর্ষপদে গান্ধী পরিবারের কেউ না কী গান্ধী পরিবারের বাইরের কেউ আসবেন তা নিয়ে বরাবরের মতো একটা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাজ করছে।
শশী থারুর (Shashi Tharoor)
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তার ইংরেজি শব্দচয়নের জন্য বিখ্যাত। মিডিয়ায় অত্যন্ত পরিচিত নাম। সভ্রান্তদের প্রিয়জন তিনি। কিন্তু মাঠে ঘটে নেমে কাজ করতে পারবেন কি? সেটাই বড় প্রশ্ন। তবে সম্ভব্যদের তালিকায় নাকি তাঁর নাম আছে বলেই খবর।
অশোক গেহলট (Ashok Gehlot)
সোনিয়া গান্ধীর ‘অনুগত’ বলে পরিচিত রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। কিন্তু গেহলট সভাপতি হওয়ার বিষয়ে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছেন। দলের ‘ভারত জোড় যাত্রা’ শুরুর আগে সাংবাদিক সম্মেলনে গেহলট বলেন, “কেন দলের প্রত্যেক সদস্য বলেন যে রাহুল গান্ধীরই দলের প্রধান হওয়া উচিত এবং কেন আজও কংগ্রেসের পুরুষ ও মহিলা কর্মীরা রাহুল গান্ধীকে সভাপতি হিসেবে দেখতে চাইছেন তা বুঝতে হবে। কারণ, তিনি যদি সভাপতি হন তবে দল ঐক্যবদ্ধ থাকবে।”
শচীন পাইলট (Sachin Pilot)
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এবং বর্তমানে রাজস্থানের সাংসদের সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক নিয়ে টানাপোড়েন আছে। তবু দলের তরুণ প্রজন্মের মুখ তিনি। পাইলটকে সর্বোচ্চ আসনে বসলে বুঝতে হবে কংগ্রেসের খোলনলচে সাফ হয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা হচ্ছে।
ফলে গান্ধী পরিবারে অনুগত বলে বেশ কয়েক জন নেতা-নেত্রীর নাম এখন আলোচনায় ঘোরাফেরা করছে ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল, মীরা কুমার, অম্বিকা সোনি, মুকুল ওয়াসনিক, কুমারী শৈলজার নাম।
তবে যার নামটা একদমই দৌড়ে নেই বলে সূত্রের খবর, সেট হল অধীর চৌধুরীর। বেফাঁস কথা বলে লোকসভায় কংগ্রেসের নেতার পদটি কদিন আগে খুইয়েছেন। তারপর দেশের মহিলা রাষ্ট্রপতিকে রাষ্ট্রপত্নী বলে সম্বোধন করে মাফ চাইতে হয়েছে তাঁকে। বাংলার দিকে তাই ফিরেই তাকাচ্ছে না কংগ্রেস, এই রকমই খবর।
সব মিলিয়ে কংগ্রেসের সভাপতি কে হবেন তা নিয়ে নানা ধরনের জল্পনা চলছে। এবং এটা স্পষ্ট দলের শীর্ষপদে গান্ধী পরিবারের কেউ না কী গান্ধী পরিবারের বাইরের কেউ আসবেন তা নিয়ে বরাবরের মতো একটা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাজ করছে।