ডেঙ্গি নিয়ে জেলাশাসকদের সতর্ক করে পাঁচ দফা নির্দেশ রাজ্য সরকারের
নিম্নচাপের জেরে রাজ্য জুড়ে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তরের তরফে বৃষ্টির পূর্বাভাসও রয়েছে। ফলে এই আবহে ডেঙ্গির আশঙ্কায় কপালে ভাঁজ পড়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের।
স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন বলছে, ইতিমধ্য়েই রাজ্য়ে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচশো ছাড়িয়েছে। নতুন আক্রান্ত ৫৬৬ জন। সরকারি হাসপাতালগুলিতে ডেঙ্গি সন্দেহে ও জ্বরের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি অন্তত ৫৮৪ জন। এ শহরেও ডেঙ্গি (Dengue) বেড়ে চলেছে লাফিয়ে লাফিয়ে। কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও দার্জিলিঙের ডেঙ্গি (Dengue) পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।
ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে গত সোমবারই কলকাতা পুরসভায় একটি বৈঠক করেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বৈঠকের পর মেয়র জানান, ডেঙ্গি প্রতিরোধে ‘ফিভার ক্যাম্প’ করবে পুরসভা। শহরের ২০-২৫টি ওয়ার্ড বেশি রকম ডেঙ্গিপ্রবণ। অন্যান্য ওয়ার্ডে ডেঙ্গি ছড়ালেও এই সমস্ত ওয়ার্ডে প্রকোপ তুলনায় বেশি। পরিস্থিতির মোকাবিলায় ২৫টি ওয়ার্ডেই ফিভার ক্যাম্প চালু হচ্ছে।
শুধু কলকাতায় নয়, জেলায় জেলায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলাশাসকদের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে জানানো হয়েছে, পাঁচ দফায় পদক্ষেপ নিতে হবে খুব তাড়াতাড়ি।
কী সেই পদক্ষেপ?
১) যদি জেলা হাসপাতাল বা জেলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে রোগীকে পরীক্ষা করে ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া টেস্ট করাতে বলে তাহলে দ্রুত সেই রোগীর নমুনা নিয়ে ল্যাবরেটরিতে পাঠাতে হবে। রোগীকে বার বার ওপিডিতে পাঠানো যাবে না।
২) প্রতিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মহাকুমা ও গ্রামীণ হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজগুলিতে জরুরি ভিত্তিতে খুলতে হবে ফিভার ক্লিনিক। যাতে ওপিডির সময়সীমাকে বাঁচানো যায়।
৩) আশা কর্মী, স্বাস্থ্য কর্মীদের ইতিমধ্যেই উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া নিয়ে সচেতনতার বার্তা দেবে। নমুনা সংগ্রহ করবে। ডেঙ্গি নিয়ে কোনও রোগী বাড়িতে থাকলে সেই বাড়ির চারপাশে স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থাও করবে।
৪) ডেঙ্গি পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হয় তাহলে ডেপুটি মেডিক্যাল অফিসার পদমর্যাদার আধিকারিকরা প্রতিটি জেলায় বিশেষ দায়িত্ব নেবেন।
৫) পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে ঘর ও চারপাশের পরিবেশ। বাড়ির চারপাশে, ফুলের টবে বৃষ্টির জল জমতে দেওয়া যাবে না। সেদিকেও নজর রাখতে প্রচারও করতে বলা হয়েছে।