রাজ্যে কেন ‘ঠুঁটো জগন্নাথের’ ভূমিকা? পলিটব্যুরোর বৈঠকে মুখ পুড়ল বঙ্গ CPIM-এর
সাম্প্রতিককালে রাজ্য রাজনীতিতে ঘটে চলছে একের পর এক ঘটনা। বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে কলকাতা ও হাওড়ায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। অথচ বিজেপি বিরোধিতা ও রাজ্যে সরকার বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার প্রশ্নে সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের ভূমিকা ‘বিগ জিরো’। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঠুঁটো জগন্নাথের ভূমিকা পালন করেছে বঙ্গ সিপিএম। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সিপিএম পলিটব্যুরোর বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে রাজ্য নেতৃত্বকে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিপিএম-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। এছাড়াও সেখানে ছিল কেরল ও বাংলার প্রতিনিধিরাও।
এই দিনের বৈঠকে সর্বভারতীয় রাজনীতির কথা চিন্তা করে আপাতত ‘রাজ্যে দোস্তি দিল্লিতে কুস্তি’ নীতির খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের হাল ফেরাতে পার্টির নরম মনোভাব নিয়ে চলার প্রয়োজন বলে ব্যখ্যা দিয়েছেন ইয়েচুরি। আবার অন্য দিকে ছাত্র সংগঠনের ওপর দায় চাপিয়ে ক্ষান্ত হয়েছেন পিনারাই বিজয়নরা। সূত্রের খবর, আপাতত কংগ্রেস, তৃণমূলসহ অন্যান্য মোদী সরকার বিরোধী দলগুলির প্রতি নরম মনোভাব নিয়ে চলতে হবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে, কেরলে দ্বিতীয় সিপিএম সরকারের সমীচিন অবস্থা। ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের বিস্তর অভিযোগে বিদ্ধ পার্টি। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে তৎপর বিজেপি নেতৃত্ব। তাই নিজেদের অস্তিত্ব রাখার তাগিদে বিজেপি বিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয় এই বৈঠকে।
বিজেপির বিকল্প শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ বঙ্গ সিপিএম। পঞ্চায়েতে দুর্নীতি, টেট দুর্নীতি, সরকারি দলের একের পর নেতা গ্রেপ্তারের ইস্যুতে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতিতেই সীমাবদ্ধ ছিল তাদের প্রতিবাদ। কোনও বড়সড় আন্দোলন গড়ে তুলতেও ব্যর্থ সিপিএম নেতৃত্ব। কিছুদিন আগে বর্ধমানে কার্জন গেট চত্বরে জঙ্গি আন্দোলন চালিয়ে বিশ্ব বাংলার লোগো ভাঙচুর করেও জনমানসে কোনও ছাপই ফেলতে পারেনি তারা।
রাজ্যে সিপিএমের পাখির চোখ পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই নির্বাচনে বিজেপির তুলনায় কী করে বেশি সংখ্যক প্রার্থী দেওয়া যায় সেনিয়েও আলোচনা হয় এই বৈঠকে। অর্থাৎ শূন্যের কলঙ্ক ঝেড়ে ফেলে যেন-তেন প্রকারেণ নিজেদের ‘দু’নম্বর’ প্রমানে তৎপর রাজ্য সিপিএম তথা সীতারাম ইয়েচুরিরা।