৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারের অর্থনীতি মোদীর কল্পনা, মত প্রাক্তন RBI গভর্নরের
মূল্যবৃদ্ধির দাপটে নাজেহাল আম জনতা, বেকারত্বের জ্বালায় পুড়ছে গোটা দেশ। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ২০২৩ সালে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫.২ শতাংশে নেমে আসতে পারে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে অলীক স্বপ্ন দেখছেন মোদী। সেই স্বপ্ন আর বাস্তবের মধ্যে আকাশ-পাতালের তফাৎ। উল্লেখ্য, ভারতকে ২০২৫ সালের মধ্যে পাঁচ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারের অর্থনীতির দেশ রূপে তুলে ধরতে চান মোদী। ১৮ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর সি রঙ্গরাজন কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন, পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি মোদীর অলীক কল্পনা মাত্র। তার সাফ কথা, পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির লক্ষ্যমাত্রাকে ছুঁতে হলে প্রতি বছর আর্থিক বৃদ্ধির হার অন্তত নয় শতাংশে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু বাস্তব ছবিটা একেবারেই আলাদা, আর্থিক বৃদ্ধির হার তলানিতে এসে ঠেকেছে।
প্রাক্তন গভর্নরের মতে, আর্থিক বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে হলে বিনিয়োগে জোর দিতে হবে। বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মোদী আমলে কমতে কমতে বিনিয়োগের হার ২৭-২৮ শতাংশে নেমে এসেছে। তার মতে, বিনিয়োগের হার অন্তত ৩৩ শতাংশে নিয়ে যাওয়া দরকার। সেই সঙ্গে বেসরকারি বিনিয়োগের পরিমাণ অনেকাংশে বাড়ানো দরকার বলেই মনে করছেন তিনি। কৃষি বিপণন বা বিদ্যুতের মতো ক্ষেত্রগুলির সংস্কারে জোর দেওয়ার কথা বলছেন তিনি।
সংস্কারের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি, আগে যখন এই ধরণের সংস্কারগুলো হত তখন তা এক সঙ্গেই করা হত।
এখন রাজ্যগুলির সঙ্গে, মূলত অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় রাখার বিষয়ে আগ্রহী নয় মোদী সরকার, বিরোধীরা এমনই অভিযোগ করেন। প্রাক্তন গভর্নর স্পষ্ট বলছেন রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় না রাখতে পারলে আর্থিক সমৃদ্ধি সম্ভব নয়। পাশাপাশি তার মত, টাকার দর যেভাবে হ্রাস পাচ্ছে, তা হয়ত আটকানো যাবে। কিন্তু এখনই টাকার মূল্য করোনা পূর্ববর্তী পরিস্থিতিতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। রঙ্গরাজন মতে, অর্থনীতি চাঙ্গা করতে যেসব নতুন কিছু নীতি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, সেগুলি কাজের বাজারে যতটা কম প্রভাব ফেলবে তত ভাল। তার অভিমত, মোদী সরকারের বেশি কিছু নীতি কাজের বাজারে ঋণাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।