প্রতিবছরের মতো এবারও পুজোয় সুষ্ঠভাবে যানজট-ভিড় সামলানোই চ্যালেঞ্জ পুলিশের
পুজোর দিনগুলোতে প্রতিবছর কলকাতায় লাখ লাখ মানুষের সমাগম হয়। প্রত্যেকে যেন নিরাপদে ও আনন্দের সঙ্গে উৎসবে সামিল হতে পারেন, তার জন্য কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) পক্ষ থেকে বিশেষ পরিকল্পনা করা হয়। এবছরও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
রবিবার জি ডি বিড়লা সভাঘরে পুজো উদ্যোক্তাদের নিয়ে সমন্বয় বৈধকে বসলেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়ল। এই বৈঠকে উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার একাধিক বড় পুজো কমিটিই ট্রাফিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
দক্ষিণ কলকাতার নিউ আলিপুরের সুরুচি সংঘের উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়, প্রায় দেড় বছর ধরে চেতলার লক গেট সারাইয়ের কাজ হচ্ছে। সুরুচি সংঘ ছাড়াও চেতলায় আরও দু’টি বড় পুজো হয়। ব্রিজ বন্ধ থাকায় পুজোর সময় গাড়ির চাপ বেড়ে যায়। তৈরি হয় যানজট। ভিড় ঠেলে এক মণ্ডপ থেকে অন্য মণ্ডপে যেতে সমস্যায় পড়েন দর্শনার্থীরা। বুড়ো শিবতলা মেন রোড, টালিগঞ্জ ফাঁড়ির সেতুতেও যানজট থাকে। চেতলা অগ্রণীর কর্মকর্তা সৌম্য মুখোপাধ্যায় জানান, চেতলা লকগেট বন্ধ থাকায় দুর্গাপুর ব্রিজের উপর চাপ বাড়ছে। এছাড়াও রাসবিহারী অ্যাভিনিউ থেকে শুরু করে নিউ আলিপুর, বেহালার যানজট লেগেই থাকে।
বেহালার ২৯ পল্লির এক উদ্যোক্তা জানান, বেহালায় ডায়মন্ডহারবার রোডে যানজট থাকে। একটু রাত হতেই জেমস লং সরণিতে বাইকের দৌরাত্ম্যর বেড়ে যায়। টালিগঞ্জের প্রতাপাদিত্যা ত্রিকোণ পার্ক বারোয়ারির পক্ষে জানানো হয়, এলাকায় মাতৃসদন হাসপাতাল থাকার ফলে পুজোয় যদি ট্রাফিক সমস্যায় থাকে, তবে অ্যাম্বুলেন্স আটকে যেতে পারে। রোগীরা পড়তে পারেন সমস্যাায়। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডে বাইকের বেআইনি পার্কিং হয়। গড়িয়াহাটের হিন্দুস্থান পার্ক সার্বজনীন দুর্গোৎসবের জানানো হয়, মণ্ডপের কাছে কার পার্কিং হয়। ব্যারিকেড থাকায় রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে যায়। তাতেই দুই লেনে গাড়ি চলে। সেখানে যানজট এড়াতে ওয়ান ওয়ের পরামর্শ দেন তিনি। তেলেঙ্গাবাগান সার্বজনীনের পক্ষে এলাকার ট্রাফিকের সমস্যাও তুলে ধরে তা দেখতে অনুরোধ জানানো হয়।
পুজো (Durga Pujo) উদ্যোক্তাদের বক্তব্য শুনে পুলিশ কমিশনার মঞ্চ থেকেই ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কমিশনার, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক), ডিসি (ট্রাফিক)কে নির্দেশ দেন, তাঁরা যেন নিজেরা ওই এলাকাগুলিতে গিয়ে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। প্রয়োজনমতো ব্যাারিকেড ও গার্ডরেল বসিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। শহরের ট্রাফিক ব্যসবস্থা যাতে মসৃণ থাকে, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে পুজো উদ্যোক্তাদের আশ্বাস দেন তিনি। এদিন বৈঠকে পুলিশ কমিশনার জানান, কলকাতার দুর্গোপুজো ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়েছে। দেশবিদেশ থেকে বহু মানুষ আসবেন কলকাতার পুজো দেখতে।
এদিনের বৈঠকে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার শুভঙ্কর সরকার জানান, এবার ডিজে নিয়ে অত্যন্ত কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিসর্জনের সময় রাস্তা ও ঘাটগুলিতে যাতে কোনওমতে ডিজে না থাকে, তার জন্য পুজো কমিটিগুলিকেই নজর রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে। ডিজে থাকলেই কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।