বর্ণময় দুই দশকের কেরিয়ারে কী কী নজির রয়েছে ঝুলনের ঝুলিতে?
দাঁড়ি পড়ল দু-দশকের দীর্ঘ আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে। লর্ডসের শেষ ম্যাচেও শিকার করলেন ঝুলন, ১০ ওভার বল ঘুরিয়ে ৩০ রানের বিনিময়ে তুলে নেন ২টি উইকেট। কেরিয়ারের শেষ ওভারে কোনও রান খরচ না করে, একটি উইকেট তুলে নিয়ে যেতে যেতেও নজির গড়ে গেলেন ঝুলন। টেস্ট, ওয়ান ডে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের তিন ঘরানা মিলিয়ে ভারতের হয়ে মোট ২৮৪টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ঝুলনের ঝুলিতে রয়েছে ৩৫৫টি উইকেট। যা মেয়েদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বাধিক। মহিলা ক্রিকেটে ঝুলনই একমাত্র ২০০ উইকেটের মালিক। ওডিআই ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট ঝুলনেরই, ২৫৫। টেস্টে পেয়েছে ৪৪টি উইকেট, টি টোয়েন্টিতে শিকার করেছেন ৫৬টি উইকেট। মহিলা ক্রিকেটের বিশ্বের দ্রুততম বোলারও ঝুলন। ঘণ্টায় গড়ে ১২০ কিলোমিটার বেগে বল করেন তিনি।
মহিলা ক্রিকেটে ওয়ান ডে-তে ১০০০ রান, সেই সঙ্গে ১০০ উইকেট ও ৫০টি ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ড রয়েছে ঝুলনের দখলে। টেস্ট ও ওয়ান ডে-দুই ফরম্যাট মিলিয়ে আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের সময়কালের নিরিখে বিশ্বে তার স্থান দ্বিতীয়। ১৯ বছরের ২৬২ দিন দীর্ঘ টেস্ট কেরিয়ারের পর, গতকাল শেষ হল ২০ বছর ২৫৮ দিনের ওয়ান ডে কেরিয়ার। টেস্ট ক্রিকেটে মাত্র ২৩ বছর বয়সে প্রতিপক্ষের দশ উইকেট নিয়ে নজির গড়েছিলেন। সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ১০ উইকেট নেওয়ার সেই নজির আজও অক্ষত। টেস্টে সর্বাধিক বোল্ড করার (১৮) রেকর্ড ঝুলনের দখলে। টেস্ট কেরিয়ারে এক ম্যাচে একবারই ১০ উইকেট পেয়েছেন তিনি। দু-বার একই ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছেন, এই দুই ক্ষেত্রেই তিনি বিশ্বে দ্বিতীয়। টেস্ট ক্রিকেটার জীবনে ৯৯৪৫টি বল করে সর্বাধিক বল করার নজিরও রয়েছে তার। ওয়ান ডে-তে ৬৮টি ক্যাচ নিয়ে তিনি দ্বিতীয় স্থান নিজের দখলে রেখেছেন। ওয়ান ডে-তে সর্বাধিক মেডেন রয়েছে ঝুলনের, সংখ্যাটা ২৬৫। একদিনের ক্রিকেটে ১০০০০ বল করা প্রথম ক্রিকেটার তিনি। টেস্টে তার সেরা পারফর্মেন্স ২৫ রানের বিনিময়ে ৫ উইকেট। টি-টোয়েন্টির ক্ষেত্রে তার কেরিয়ার বেস্ট হল ১১ রানের ৫ উইকেট। ওয়ান ডে ৩১ রানের বিনিময়ে ৬ উইকেট ছিল তার সেরা পারফর্মেন্স।
২০০২ সালে জাতীয় জার্সিতে ভারতীয় দলে অভিষেক হয় ঝুলনের। ২০০৮ থেকে ২০১১ পর্যন্ত ভারতীয় মহিলা দলের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০০৭ সালে আইসিসি মহিলা বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার পেয়েছিলেন এই বঙ্গ তনয়া। ২০১০ সালে অর্জুন পুরস্কার এবং ২০১২ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন ঝুলন।