আরও প্রকট বিজেপির কোন্দল, পঞ্চায়েত কমিটি নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত সুকান্ত অমিতাভরা
দোরগোড়ায় পঞ্চায়েত ভোট, নির্বাচনের প্রস্তুতিতে মাঠে নেমে পড়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। পঞ্চায়েত ভোটকে (Panchayet Election) সামনে রেখে, এক কমিটি গড়েছে বঙ্গ বিজেপি। কমিটির মাথায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীকে বসানো হয়েছে। এবার সেই কমিটিকে ঘিরেই বিজেপির অন্দরে উঠে গেল প্রশ্ন। কাটল না মাসখানেক, কমিটির কার্যকারিতা নিয়ে সংশয়ে বঙ্গ বিজেপি। স্বয়ং রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও (Sukanta Majumdar) এই কমিটি নিয়ে সন্ধিহান।
বিজেপির অন্দরে খবর দলের একাধিক সাংসদও পঞ্চায়েত কমিটির সদস্যদের নিয়ে না খুশ। দলীয় বৈঠকেও এই কমিটি নিয়ে কেউ কেউ সরব হয়েছে। গত সোমবার পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে প্রথম বৈঠকে বসেছিল বঙ্গ বিজেপি। নবনিযুক্ত কেন্দ্রীয় ইনচার্জ মঙ্গল পান্ডে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তার সামনেই বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। শোনা যাচ্ছে, বৈঠকে বঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীর (Amitava Chakraborty) সঙ্গে সৌমিত্র খাঁর তীব্র কথা কাটাকাটি হয়। আরেক সাংসদ জগন্নাথ সরকারও কমিটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সরব হয়। এক কথায় বঙ্গ বিজেপি জগাখিচুড়ি হয়ে রয়েছে, বঙ্গ বিজেপির নেতাদের চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল চেহারা দেখে ঘাবড়ে যান বিহার বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক পান্ডে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা-সাংসদ-বিধায়কদের নিয়ে কমিটি গড়েছিলেন অমিতাভবাবু। মাথাভারী নেতা সর্বস্ব সেই কমিটির সঙ্গে তৃণমূলস্তরের কোনও যোগাযোগ নেই। নেতৃত্বের সঙ্গে গ্রাম বাংলার প্রান্তিক এলাকার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। তা নিয়ে সোমবারের বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতার সামনে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির একাধিক নেতা। পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনা করার জন্যে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় এলাকা ভিত্তিক নিচুতলার কর্মীদের সামনে আনার পক্ষেই সওয়াল করেছেন সুকান্তও।
সৌমিত্র খাঁ (Saumitra Khan) সরাসরি ওই কমিটির বিরোধিতা করেছেন। পঞ্চায়েত ভোটের জন্য আলাদা কমিটি তৈরির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সৌমিত্র প্রশ্ন তুলছেন। বেছে বেছে কেন পুরনো নেতাদের বাদ দেওয়া হয়েছে, সেই প্রশ্নে আবারও বিজেপির আদি-নব্য সংঘাত উস্কে দেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ।
পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরোতেই বঙ্গ বিজেপির (BJP) সংগঠন হর্তাকর্তা অমিতাভ আসরে নামেই। সৌমিত্র অমিতাভ কোন্দল চরমে পৌঁছয়। রানাঘাটের সাংসদ সৌমিত্রকে সমর্থন করে বলেন, কলকাতায় ঠান্ডা ঘরে বসে ছক করলে সব মাঠে মারা যাবে। সুকান্তও বড় নেতাদের ছেড়ে, স্থানীয়দের সামনে রেখেই লড়তে চাইছেন। পঞ্চায়েত কমিটি নিয়ে বঙ্গ বিজেপির সংগঠনের হোতা ও সভাপতি দ্বিধাবিভক্ত, ফলে আবারও প্রকট হল বিজেপির ফাটল। সেই সঙ্গে আরও বিপাকে পড়ল বিজেপি।