টাকার দামে রেকর্ড পতন, গ্যাস-পেট্রল-ডিজেলের দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা
দেশের আর্থিক বিশেষজ্ঞদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে সপ্তাহের শুরুতে ফের টাকার দামে রেকর্ড পতন। ডলার প্রতি টাকার দাম কমে হল ৮১ টাকা ৪৭ পয়সা, যা এখনও পর্যন্ত সর্বনিম্ন। গত শুক্রবারের পতনে ডলার প্রতি টাকার দাম দাঁড়িয়েছিল ৮০ টাকা ৯৯ পয়সা। এদিন তা ছাপিয়ে গেল।
বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, এতে অশোধিত তেল, গ্যাস ও অন্যান্য পণ্য আমদানির খরচ বাড়বে। যা পণ্যের দাম বাড়িয়ে মূল্যবৃদ্ধির হারকে আরও উপরে তুলবে। যদিও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী মনে করেন না এজন্য উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ আছে! শনিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ডলারের তুলনায় একমাত্র টাকা অন্যান্য দেশের মুদ্রার থেকে অনেক বেশি স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। তাঁর দাবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আর কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক গোটা পরিস্থিতির উপর অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে নজর রাখছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গোটা এশিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল নয়। প্রভাব পড়ছে কমবেশি সব দেশে। এমনকী ডলারের নিরিখে চিন ও জাপানের মুদ্রাতেও পতন হচ্ছে। তার প্রভাব পড়ছে ভারতেও। এদিকে সোমবার পতন হল সেনসেক্স ও নিফটিতেও।
আবার বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, টাকা এত দুর্বল হওয়ার প্রধান কারণ আমেরিকায় বিপুল হারে সুদ বৃদ্ধি। তাঁদের দাবি, যতদিন আমেরিকা মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরাতে সুদ বাড়াবে, ততদিন ডলার চড়বে। আর ভারতকে যেহেতু প্রয়োজনীয় তেলের ৮৫% এবং গ্যাসের ৫০% আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হয়, তাই এগুলি কেনার খরচও বাড়বে।
সূত্রের খবর, বিশ্ব বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রাখতেই ১ অক্টোবর পরবর্তী ছ’মাসের জন্য দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বাড়ানো হতে পারে। ওএনজিসির মতো রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার পুরনো গ্যাস ক্ষেত্রগুলি থেকে উৎপাদিত প্রতি মিলিয়ন ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট গ্যাসের দাম ৬.১ ডলার থেকে বেড়ে হতে পারে ৯ ডলার। দুর্গম ক্ষেত্রগুলির ক্ষেত্রে তা ৯.৯২ ডলার থেকে বেড়ে ১২ ডলার ছুঁতে পারে। এই গ্যাস বিদ্যুৎ এবং সার উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। তৈরি হয় গাড়ির জ্বালানি সিএনজি। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এর ফলে ওই সমস্ত পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়বে। ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত দু’বার প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বেড়েছে।