তৃতীয়াতেই সপ্তমীর আমেজ, পঞ্জিকা কি পাল্টে গেল?
বুধবার সকাল ৯টা। দক্ষিণ কলকাতার গোলপার্কে গাঙ্গুরামের সামনে ছোট্ট চায়ের দোকানে জটলা। উপস্থিত পায়ে স্নিকার্স পড়া পঞ্চাশোর্ধ ৬জন ভদ্রমহিলা। একটু জোরেই কথাবার্তা চলছে, সিংহী পার্ক যাওয়া হবে, না আগে সুব্রতর ঠাকুর (সিংহী পার্কার উল্টোদিকের ফুটপাথে একডালিয়া এভারগ্রীন) দেখতে জয়া হবে. তার আগে, বাবুবাগান, সেলিমপুর পল্লী, যোধপুর পার্ক, এসব কমপ্লিট।
তৃতীয়া না সপ্তমী! আপনি ধরতে পারবেন না! প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ভিড় জমছে, কাতারে কাতারে মানুষ আসছেন। বোঝার উপায় নেই তিথি কি! শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের সামনের রাস্তায় তিল ধারণের জায়গা নেই। হঠাৎ করেই কি পঞ্জিকা বদলে গেল? নাকি বেণীমাধব বাবু ভুল করে ফেললেন? এর নেপথ্যে রয়েছে বাঙালির উন্মাদনা।
দুর্গাপুজোর বিশ্বজনীন স্বীকৃতি আর করোনা পেরিয়ে ফের চেনা ছন্দে দুগ্গাপুজো, দুইয়ের আনন্দেই মাতোয়ারা সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে, বৃষ্টি অসুরের আশঙ্কা থাকছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বৃষ্টির আশঙ্কা নিয়ে একাধিক মিম ঘুরছে। ষষ্ঠীর রাত থেকেই কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। অষ্টমী থেকে দশমীতেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা দিয়ে রাখা হচ্ছে। তাই উৎসবপ্রিয় বাঙালি তৃতীয়া থেকেই নামল দুর্গা দর্শনে। মণ্ডপে মণ্ডপে শুধু কালো মাথার ঢেউ। বেলুন থেকে ভেঁপু, ফেরিওয়ালারা পসরা সাজিয়ে বসেছেন, আইসক্রিমওয়ালা থেকে রেস্তোরাঁর রাঁধুনি কারও বসে থাকার সময় নেই।
এদিন সপ্তমীর ছন্দেই ধরা দিল তিলোত্তমা। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ একই ছবি। মানুষের ঢল, মণ্ডপে ঢুঁ মারা। তৃতীয়ার ভিড় সামলাতে হিমশিম খেয়েছে পুলিশও। সেলফি আর ফটো সেশনের দাপটে চারিদিক উৎসব মুখর। মা দুর্গাকে ব্যাকড্রপে রেখে সেল্ফি তোলার হিড়িক চলেছে। রাত যত বেড়েছে, বেড়েছে ভিড়। আগে ভাগে ঠাকুর দেখা সেরে ফেলতে চাইছে বাঙালি।