শিবমন্দির, বাদামতলা, মুদিয়ালি, ৬৬ পল্লির মণ্ডপ সেজে উঠেছে জীবনের বার্তায়
আজ চতুর্থী। পুজোর আনন্দে ফুটছে বাঙালি। নিত্যনতুন ভাবনায় দর্শণার্থীদের চমক দিতে প্রস্তুত পুজো আয়োজকরা। জুড়ে থাক যৌথ পরিবার, এবার এমনই বার্তা দিচ্ছে শিবমন্দির, বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘ, মুদিয়ালি, সমাজসেবী এবং ৬৬ পল্লি।
আমরা এমন সময় এসে দাঁড়িয়েছে, যেখানে ভেঙে যাচ্ছে একান্নবর্তী পরিবার। যৌথ পরিবার ভেঙে টুকরো টুকরো নিউক্লিয়ার ফ্যামিলিতে পরিণত হচ্ছে। ছোট ছোট ফ্ল্যাটে যে যাঁর মতো করে আলাদা আলাদা গুছিয়ে নিচ্ছে। তৈরি হচ্ছে শূন্যস্থান। সেখানে দাঁড়িয়েই ৬৬ পল্লির পুজোর ভাবনা এক অন্ন বর্তি। এক ঠাকুর দালানে দুটি পুজো, যে আর্থিকভাবে সচ্ছল তাঁর পুজো জাঁকজমকপূর্ণ, আর যে নিম্ন মধ্যবিত্ত তাঁর পুজো আড়ম্বরহীন। একই বাড়ির ঠাকুর দালানে দুই দৃশ্য, এটাই তাঁদের মণ্ডপ। পুজোর কর্মকর্তারা বলছেন, তারা চান যৌথ পরিবার ফিরে আসুক। এক হাঁড়িতেই রান্না হোক, ঠিক আগের মতো। এই প্রজন্মকে একান্নবর্তীর অর্থ জানান দেবে এই পুজো।
শিবমন্দিরের পুজোয় থিম বিশ্বাসের দিনলিপি। পুজো প্রাঙ্গণ সেজে উঠেছে ঘট, লাল সুতো, চেলি কাপড়, ইটের টুকরো দিয়ে মানতের গিট বাঁধা। এখানে কোষাকোষির উপর মা দুর্গা অধিষ্ঠিতা। বিশ্বাসই মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়, মানুষ যেন বিশ্বাসের প্রতি আস্থা না হারায়, এটাই শিবমন্দিরের বার্তা।
মানুষের জীবনে নানান উত্থান-পতনের সমাহার। শৈশব থেকে কৈশোর, কৈশোর পেরিয়ে যৌবন, আর যৌবন শেষে বার্ধক্য আসে। এটাই বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘের এবারের পুজোর থিম, পদাঙ্ক। মানুষ নিজ জীবনে কী কী কাজ করে ছাপ রেখে গিয়েছেন, সেটাই তুলে ধরা হচ্ছে বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘের এবারের পুজোর থিমে। মা দুর্গার আগমনের মধ্যে দিয়ে বছরব্যাপী প্রতীক্ষার অবসান ঘটল। মুদিয়ালি ক্লাবের থিম প্রতীক্ষা। বাহারি রঙের অসংখ্য ফিতে নিয়ে সেজে উঠেছে পুজো প্রাঙ্গণ। সৌরআলোর মাধ্যমে মণ্ডপের ভিতরের যাবতীয় আলোকসজ্জা হচ্ছে।
জীবে প্রেম করে যে জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর, এই ভাবনা থেকেই মণ্ডপ গড়েছে সমাজসেবী সঙ্ঘ। ১৯৪৬ সালের পুজো পুনর্নির্মাণ করে পুরনো নস্টালজিয়াকে ফিরিয়ে আনছে তারা। বাড়তি চমক ছিল বাঙালির পুজোর গানকে ফিরিয়ে আনা। কুমার শানু, অলকা ইয়াগনিক ও অমিত কুমাররা গানগুলি গেয়েছেন। সমাজসেবী সঙ্ঘ এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে, ১৭ জনের পড়াশোনার দায়িত্ব পালনের অগ্রসর হয়েছে তারা।