প্রচলিত দুর্গা প্রতিমার দুই ঘরানা
কংসনারায়ণ ঘরানা:
বঙ্গে প্রচলিত দুর্গা পুজোর দুটি ঘরানা রয়েছে। বিষ্ণুপুর ঘরানা এবং কংসনারায়ণ ঘরানা। ইতিহাস বলে, রাজা কংসনারায়ণ বাংলায় জাঁকজমকপূর্ণভাবে দুর্গাপুজার প্রচলন করেন, যা আজ বাঙালিদের মধ্যে কিংবদন্তীর রূপ নিয়েছে। কংসনারায়ণ তাহেরপুরের রাজা হলেও সেকালের বাংলায় তিনি ছিলেন বারো ভুঁইয়াদের অন্যতম। কংসনারায়ণের প্রবর্তিত রীতিতে লক্ষ্য করা যায় গণেশ ও কার্তিক নীচের দিকে অধিষ্ঠিত আর অন্যদিকে, সরস্বতী এবং লক্ষ্মী উপরের দিকে অবস্থান করে। এই রীতিতে প্রতিমার পিছনে অর্ধচন্দ্রাকার চালচিত্রের মধ্যে দশমহাবিদ্যার রূপ আঁকা হয়। কংসনারায়ণ গাঢ় হলুদ বর্ণের দেবী দুর্গার প্রতিমা প্রচলন করেন।
বিষ্ণুপুর ঘরানা:
এটা কংসনারায়ণের থেকেও প্রাচীন। ৯৯৭ সালে মল্ল রাজারা বিষ্ণুপুরে মাতৃ মূর্তি গড়ে দুর্গা পুজো শুরু করেন। রাজা জগৎমল্লের নির্দেশেই বিষ্ণুপুরের মৃন্ময়ী মাতার মূর্তি প্রথম নির্মিত হয়। বিশেষ রীতিতে নির্মিত দেবী মূর্তি বিষ্ণুপুর রীতির প্রতিমা বলে চিহ্নিত হয়। দেবী প্রতিমায় একই চালের মধ্যে উপরের দিকে অধিষ্ঠিত হন গণেশ এবং কার্তিক আর নীচের দিকে থাকেন লক্ষ্মী ও সরস্বতী। চালচিত্রে শিব এবং নন্দী-ভৃঙ্গিকে দেখা যায়।
(তথ্যঋণ: দুর্গাপুজো ও কিছু কথা সনৎ ঘোষ)