আজ অষ্টমী: জানেন কি কুমারী পুজোর পৌরাণিক ইতিহাস?
দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিনে অন্যতম আকর্ষণ হল কুমারী পুজো। মাতৃ আধারনায় কুমারী পুজোর চল বহুদিনের। কালীপুজো, জগদ্ধাত্রীপুজো, অন্নপূর্ণাপুজো সময়ও কুমারী পুজো দেখা যায়। দুর্গাপুজোর সময় বেলুড় মঠের কুমারী পুজো খুবই বিখ্যাত। বারোয়ারি পুজো থেকে বনেদি পুজো সর্বত্রই কুমারী পুজোর চল রয়েছে। বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে প্রতিনিয়ত স্থিতি, স্থিতি ও লয় চলছে, এই তিন শক্তিই নিহিত রয়েছে নারীর মধ্যে। এই কুমারীই নারী জাতির প্রতীক। তাই কুমারীকেই বিশ্বজননী রূপে দেবীজ্ঞানে পুজো করা হয়। শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছেন, শুদ্ধাত্মা কুমারীতে ভগবতীর প্রকাশ।
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, কোলাসুরকে বধ করার মধ্যে দিয়ে কুমারী পুজোর প্রচলন শুরু হয়। কোলাসুর একসময় স্বর্গ ও মর্ত্য অধিকার করে নিলে দেবকুল মহাকালীর শরণাপন্ন হয়। দেবতাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে দেবী পুনর্জন্মে কুমারীরূপে কোলাসুরকে বধ করেন। তারপর থেকেই কুমারী পুজোর প্রচলন হয়। দেবীজ্ঞানে যেকোন কুমারীকেই পুজো করা যায়। সেকালে মুনিঋষিরা কুমারীপুজোর মাধ্যমে প্রকৃতিকে পুজো করতেন। প্রকৃতি মানেই নারী। মহাভারতের যুগ থেকেই কুমারী পুজোর প্রচলন হয়েছিল। অর্জুনের কুমারী পুজো করার বিবরণও পাওয়া।
দেবী পুরাণে কুমারী পুজোর সুষ্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। নিয়ম অনুসারে পুজোর জন্য কুমারীর বয়স হতে হবে ১ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে। বয়স ভেদে কুমারীর নাম হয় ভিন্ন।
- এক বছরের কুমারী – সন্ধ্যা
- দুই বছরের কুমারী – সরস্বতী
- তিন বছরের কুমারী – ত্রিধামূর্তি
- চার বছরের কুমারী – কালিকা
- পাঁচ বছরের কুমারী – সুভগা
- ছয় বছরের কুমারী – উমা
- সাত বছরের কুমারী – মালিনী
- আট বছরের কুমারী – কুষ্ঠিকা
- নয় বছরের কুমারী – কালসন্দর্ভা
- দশ বছরের কুমারী – অপরাজিতা
- এগারো বছরের কুমারী – রূদ্রাণী
- বারো বছরের কুমারী – ভৈরবী
- তেরো বছরের কুমারী – মহালপ্তী
- চৌদ্দ বছরের কুমারী – পীঠনায়িকা
- পনেরো বছরের কুমারী – ক্ষেত্রজ্ঞা
- ষোলো বছরের কুমারী –অন্নদা বা অম্বিকা