মোদী সরকার কেরোসিনের কোটা অর্ধেক করলেও আপাতত মাথাপিছু বরাদ্দ কমাচ্ছে না রাজ্য
লাগাতার নানান ক্ষেত্রে মোদী সরকারের বঞ্চনার শিকার বাংলা। উৎসবের মরশুমে চলতি অক্টোবর থেকে বাংলার রেশন গ্রাহকদের জন্যে কেরোসিনের বরাদ্দ কমিয়ে অর্ধেক করে দিয়েছে মোদী। ফলে রেশন গ্ৰাহকদের মাথাপিছু কেরোসিন দেওয়ার পরিমাণও কমে যাবে। রেশন গ্ৰাহকরা কতটা কেরোসিন পাবেন তা ঠিক করে রাজ্য খাদ্য দপ্তর। জানা গিয়েছে, এই মাসে আপাতত মাথাপিছু বরাদ্দ কমানো হয়নি।
রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থারা কেরোসিনের দাম কিছুটা কমালেও দাম এখনও যথেষ্ট চড়া। সেই কারণে বহু রেশন গ্ৰাহক কেরোসিন কিনছেন না। এমতাবস্থায় মাথাপিছু বরাদ্দ কমালে, কেন্দ্র এখন যে পরিমাণ কেরোসিন দিচ্ছে তা পুরোপুরি ব্যবহার করা নাও যেতে পারে, এমনটাই খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা মনে করছেন। মনে করা হচ্ছে, আগামী জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া কোয়ার্টারে বরাদ্দ আরও কমাতে পারে মোদী সরকার। কোটা অর্ধেক করে দেওয়া হলেও এখনও অন্যান্য রাজ্যগুলির মধ্যে সর্বাধিক কেরোসিন পায় বাংলা। সেই কারণে মাথাপিছু বরাদ্দ এক রেখে কেরোসিন কতটা ব্যবহার করা যাচ্ছে, তা দেখে নিতে চাইছে রাজ্য খাদ্য দপ্তর। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পরেই আগামী মাস থেকে বন্টনের পরিমাণ নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে, বলে জানা গিয়েছে।
চলতি মাসে আগে আসার উপর ভিত্তি করে রেশন গ্ৰাহকদের কেরোসিন দেওয়ার জন্যে ডিলারদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোনও ডিলারের কেরোসিন শেষ হওয়ার পর গ্ৰাহক এলে, গ্রাহককে অন্য ডিলারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। যদিও কেরোসিন ডিলারদের সংগঠনের মতে, এতে কিছুটা জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাকে প্রতি কোয়ার্টারে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কিলোলিটার কেরোসিন বরাদ্দ করত কেন্দ্র। অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া কোয়ার্টারে মোদী সরকার তা কমিয়ে ৮৮৩৩২ কিলোলিটার করেছে। কেরোসিন হোলসেলার এজেন্টদের একটি সংগঠন ২০১৬ সালে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা করেছিল। সেই মামলায় স্থগিতাদেশ থাকায় অন্য সব রাজ্যর কোটা কমালেও বাংলার কোটা কামানো যায়নি। সম্প্রতি ওই সংগঠনের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস জোয়ারদার ওই মামলাটি প্রত্যাহার করেন। বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায় মামলাটি প্রত্যাহারের নির্দেশ জারি করেন।
কেরোসিন ডিলারদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অশোক গুপ্তর অভিযোগ হঠাৎই মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। সংগঠনের কয়েকজন সদস্য মামলা তোলার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায়ের আদালতে আবেদন করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, তাঁদের কোনরকম মতামত ছাড়াই মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে। মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টি বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায় পুনর্বিবেচনা করেননি।