দিল্লির দাঙ্গায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট জমা নাগরিক সমাজের
দিল্লির দাঙ্গায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ভূমিকায় আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত পাঁচ সদস্যের নাগরিক সমাজ সরাসরি অভিযোগের আঙ্গুল তুলল অমিত শাহর মন্ত্রকের বিরুদ্ধে।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রক্তক্ষয়ী দাঙ্গায় উত্তপ্ত হয়েছিল উত্তর পূর্ব দিল্লির একাংশ। নিরপেক্ষ ও স্বতন্ত্র পর্যবেক্ষণ এবং তথ্য অনুসন্ধানের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত হয়েছিল পাঁচ সদস্যের সিটিজেন কমিটি। এই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মদন বি লকুর। কমিটিতে ছিলেন শীর্ষ আদালতের প্রাক্তন বিচারপতি এপি শাহ, আরএস সোধি, অঞ্জনা প্রকাশ ও অবসরপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্র সচিব জিকে পিল্লাই।
কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে সরাসরি অভিযোগ করা হয়েছে অমিত শাহর বিরুদ্ধে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, দিল্লি দাঙ্গা সামাল দিতে সম্পূর্ণ রূপে ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্র। ব্যর্থ হয়েছে দিল্লি পুলিশও। দাঙ্গাকারীদের গ্রেপ্তার না করে নিরীহ মানুষ এবং ছাত্র তথা সমাজকর্মীদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে জেলে ভরেছিল পুলিশ। অথচ দাঙ্গাবাজ, দাঙ্গায় উস্কানি দিয়েছেন এমন বহু মানুষ বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেরিয়েছে। পাশাপাশি বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কপিল মিশ্র, অনুরাগ সিং ঠাকুরের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার প্রস্তাব দিয়েছে কমিটি। এই দুই নেতার কুমন্তব্য ও ‘গোলি মারো…’ স্লোগান দাঙ্গায় মদত দেয় বলে মনে করছে কমিটি।
বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ মনে করছেন নাগরিক কমিটির এই রিপোর্ট মনে করিয়ে দিয়েছে আগষ্ট মাসে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্টের কথা। সে রিপোর্টেও সরাসরি দাঙ্গা সামলানোয় ব্যর্থতার দায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ঘাড়েই ফেলা হয়েছিল। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আইনি এবং নীতিগত বিষয়ের প্রধান মৃণাল শর্মার কথায়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভায় ১১ই মার্চ বলেছিলেন যে দিল্লির দাঙ্গা থামাতে পুলিশ সদর্থক ভূমিকা পালন করেছে, অথচ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যে তদন্ত চালিয়েছে, তাতে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র উঠে এসেছে। পুলিশ যে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, সেটাই জানা গেছে।
এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত পাঁচ সদস্যের নাগরিক সমাজ শীর্ষ আদালতে যে রিপোর্ট জমা করেছে তাতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ‘ছায়া’ স্পষ্ট।