নোটবন্দি মামলায় অস্বস্তিতে মোদী সরকার, পরবর্তী শুনানি ৯ নভেম্বর
২০১৬ সালে নোটবন্দি করেছিল মোদী সরকার। সরকারের সেই সিদ্ধান্ত আদৌ বৈধ ছিল তো? সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছিল। বিরোধীদের মধ্যে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সর্বপ্রথম এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। ছয় বছর অতিক্রান্ত এখন নোটবাতিলের সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে প্রশ্নের মুখোমুখি মোদী সরকার এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বিচারপতি এস আবদুল নাজির, বি আর গাভাই, এ এস বোপান্না, ভি রামসুব্রহ্মণ্যম, এবং বি ভি নাগারত্নকে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি চলছে।
১২ অক্টোবর পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছে, নোটবাতিলের (Demonetisation Case) বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ এবং তারা তা খতিয়ে দেখবেন। ডিমনেটাইজেশনের সিদ্ধান্ত আইনতভাবে কতটা বৈধ তা হলফনামা দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে (RBI) জানাতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। কোন কোন নথিপত্রের ভিত্তিতে নোটবাতিল করা হয়েছে, তাও রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে পেশ করতেও বলা হয়েছে। দেশের শীর্ষ আদালতের এই ভূমিকায় অস্বস্তিতে মোদী সরকার। এই বিষয়ে শুনানিকে সময় নষ্ট বলেও মোদী সরকার আখ্যায়িত করলেও দেশের শীর্ষ আদালত (Supreme Court) তাতে খুব একটা পাত্তা দেয়নি।
শুনানি চলাকালীন মোদী সরকারের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরামানি ও সলিটিসটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, এহেন ব্যক্তিগত সমস্যা প্রশাসনিকভাবে যাচাই করা যায়। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চের সময় নষ্ট করার কোনও মানে নেই। জবাবে মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান জানান, এহেন গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপকে সরকারপক্ষ সময় নষ্ট বলেছে, দেখে তারা অবাক হচ্ছেন। আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী পি চিদম্বরম (P. Chidambaram) জানান, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া আইনের ২৬ ও ২৬ (২) নম্বর ধারা অনুযায়ী, কেন্দ্র কিছু সিরিজের নোট বাতিল করতে পারে। কিন্তু একটি মাত্র নির্দেশেই ৫০০ এবং এক হাজার টাকার সমস্ত নোট বাতিল করার মতো কোনও আইনি অধিকার কেন্দ্রের নেই। নিয়ম অনুযায়ী, নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্কই (Reserve Bank of India) চূড়ান্ত সুপারিশ করতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে সরকারই সর্বেসর্বার ভূমিকা নিয়েছিল।
এরপরই আদালত কেন্দ্রের কাছে ধারা ২৬ (২)অনুযায়ী সুপারিশ দেখতে চেয়েছে। সুপারিশের ভিত্তিতে কী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক? কেন্দ্রীয় সরকারের কী উত্তর ছিল, সেই সংক্রান্ত নথি দেখতে চেয়েছেন বিচারপতি। নোটবাতিলের সিদ্ধান্তে সরকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য কী ছিল? তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। ৯ নভেম্বর মামলাগুলির পরবর্তী শুনানি হবে।