ফিরছে সালিশি সভা? মামলার চাপ কমাতে খাপ পঞ্চায়েত বসানোর নিদান মোদীর
সাম্প্রতিককালে বারবার সালিশি সভার নামে অত্যাচার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে সালিশি সভার অত্যাচার। গাছে বেঁধে মারা, নগ্ন করে গ্রামে ঘোরানো, মোটা অঙ্কের জরিমানা, মহিলাদের বিরুদ্ধে ফতোয়া; সালিশি সভার মাতব্বরেরা এমনই সব নিদান দেন। গ্রামস্তরে সালিশির অত্যাচার মারাত্মক। এবার দেশজুড়ে জমে থাকা পাহাড়প্রমাণ মামলার চাপ সামলাতে, গ্রামে, গঞ্জে, পাড়ায় পাড়ায় সালিশি সভাকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার নিদান দিলেন মোদী। খাপ পঞ্চায়েতের প্রতি মোদী বরাবরই আস্থাশীল।
২০১৪-য় ক্ষমতায় এসেই হরিয়ানার সর্দারিকে নতমস্তকে প্রনাম করেছিলেন মোদী। দেশকে খাপ পঞ্চায়েতের আওতায় আনাই মোদীর প্রধান লক্ষ্য। শনিবার গোটা দেশের সব রাজ্যের আইনমন্ত্রীদের নিয়ে আইন ও বিচার মন্ত্রকের পক্ষ থেকে গুজরাতে আয়োজিত সম্মেলনে মোদী তেমন ইঙ্গিতই দিলেন। তিনি সম্মেলনে জানিয়েছেন, প্রাচীনকাল থেকেই ভারতে সালিশি সভার প্রচলন ছিল। আইনসম্মতভাবে সালিশি সভাকে ফেরাতে চাইছেন তিনি। রাজ্যগুলিকে এব্যাপারে উদ্যোগ নিতে বলা হচ্ছে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন মোদী।
প্রসঙ্গত, সালিশি সভা নিয়ে নানান বিতর্ক হয়েছে। সাম্প্রতিককালে মূলত পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ এবং হরিয়ানার ‘খাপ পঞ্চায়েত’ ব্যবস্থা নিয়ে একাধিকবার বিতর্ক ছড়িয়েছে। জাতপাতের সমস্যা, অসবর্ণ বিবাহ, জাতি ও সম্প্রদায়গত হানাহানি, সামাজিক বয়কট জাতীয় বিরোধের আইন বহির্ভূত মীমাংসা করা হয় সালিশি সভায়। বিষয়টি সংবিধানের পরিপন্থী। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আইনি বিচার ব্যবস্থার পাশাপাশি, বিকল্প মীমাংসা কাঠামো অর্থাৎ প্রাচীন সালিশি ব্যবস্থার সমার্থক বিচার ব্যবস্থা চাইছেন। এক কথায়, সালিশি প্রক্রিয়াকে আইনি কাঠামোর আওতায় আনতে চায় মোদী সরকার।
মোদীর মতে, শহর অথবা গ্রামের একেবারে স্থানীয়স্তরের কোনও সমস্যা মেটানোর দায়িত্ব নিতে পারে একটি স্থানীয় কমিটি। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সেখানেই মীমাংসা করা হবে। প্রচলিত সালিশি সভাকে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে আইনি পরিকাঠামোর অধীনে শাখায় পরিণত করতে চাইছে প্রধানমন্ত্রী। মোদ্দাকথা, গ্রাম অথবা পাড়ার সালিশি সভাকে নিম্ন আদালত জাতীয় কিছু একটায় পরিণত করা হবে।