কত রূপে পূজিতা হন মা কালী? জেনে নিন
তন্ত্র মতে বিভিন্ন রূপে পূজিতা হন মা কালী। পণ্ডিতদের একটি মত অনুসারে, মা কালী মূলত আট প্রকার, দক্ষিণাকালিকা, সিদ্ধকালিকা, গুহ্যকালিকা, শ্রীকালিকা, ভদ্রকালী, চামুণ্ডাকালিকা, শ্মশানকালিকা ও মহাকালী। অপর একটি মত অনুসারে, কালী মোট ৯ প্রকার, দক্ষিণাকালী, ভদ্রকালী, শ্মশানকালী, কালকালী, গুহ্যকালী, কামকলাকালী, ধণকালিকা, সিদ্ধকালী, চণ্ডিকালিকা।
জেনে নিন কী কী রূপে পূজিতা হন দেবী
দক্ষিণাকালী – প্রচলিত কালী প্রতিমার মধ্যে অন্যতম দক্ষিণাকালী। দক্ষিণে অধিপতি যম। সেই যম দেবীর ভয়ে পলায়ন করেন, তাঁরই নাম দক্ষিণাকালী। এই রূপের মায়ের গলায় মুণ্ডমালার হার, কানে দুই শবরূপী কর্ণাবতংস, কটিদেশে নরহস্তের কটিবাস। কালী ত্রিনয়নী ও মহাদেবের বুকে দণ্ডায়মান।
ভদ্রকালী – শাস্ত্র মতে এই রূপের মা, মরণকালে জীবের মঙ্গল বিধান করেন, তাই তাঁর নাম হয়েছে ভদ্রকালী। কালিকাপুরাণ অনুসারে, ভদ্রকালীর গায়ের রং অতসীপুষ্পের ন্যায়, মাথায় জটাজুট, ললাটে অর্ধচন্দ্র এবং গলায় কণ্ঠহার। তন্ত্রমতে কৃষ্ণবর্ণা, কোটরাক্ষী, সর্বদা ক্ষুধিতা, মুক্তকেশী রূপে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
গুহ্যকালী – মূলত সাধকগণের আরাধ্যা নব রত্ন ভূষিতা এই কালী। গুহ্যকালীর বর্ণ গাঢ় মেঘের মতো। তিনি দ্বিভূজা, গলায় পঞ্চাশটি নরমুণ্ডের মালা, কটিতে ক্ষুদ্র কৃষ্ণবস্ত্র, মস্তকে জটা ও অর্ধচন্দ্র, কর্ণে শবদেহরূপী অলংকার, বামকঙ্কণে তক্ষক সর্পরাজ ও দক্ষিণকঙ্কণে অনন্ত নাগরাজ। তিনি নিয়মিত শবমাংস খান।
সিদ্ধকালী – সিদ্ধ সাধকদের আরাধ্যা এই কালী। কালীতন্ত্রে দেবীকে দ্বিভূজা রূপে কল্পনা করা হয়েছে। সিদ্ধকালীর সালংকারা। তাঁর এক পা শিবের বুকে ও অপর পা শিবের উরুদ্বয়ের মধ্যস্থলে অবস্থিত।
চামুণ্ডাকালী – ভাগবত পুরাণ ও মারকেন্ডিয় পুরাণ অনুসারে চণ্ড ও মুণ্ড নামে দুই অসুর বধের উদ্দেশ্যে দেবী দুর্গার ভ্রুকুটি থেকে এই দেবীর সৃষ্টি হয়েছে। ভাগবত পুরাণ অনুসারে এই দেবী ব্যাঘ্র চর্ম পরিহিত ও দেবী বিকট দন্ত, অস্তিচর্মসার।
মহাকালী – তন্ত্রসার গ্রন্থমতে মহাকালী পঞ্চবক্ত্রা এবং পঞ্চদশনয়না। তবে শ্রীশ্রীচণ্ডীতে দেবীকে আদ্যাশক্তি, দশভূজা রূপে বর্ণিত। তাঁর দশ হাতে খড়্গ, চক্র, গদা, ধনুক, বাণ, পরিঘ, শূল, ভূসুণ্ডি, নরমুণ্ড ও শঙ্খ।
শ্মশান কালী – এই দেবীর শ্মশানে বাস। কথিত আছে, প্রাচীনকালে কোনও কোনও ডাকাতও নাকি এই কালীর আরাধনা করা করতেন ।
রক্ষাকালী – এই দেবীর বাহন সিংহ। প্রাচীন কালে লোকালয়ের রক্ষার জন্য এই দেবীর পুজা করা হতো। এই দেবীর পুজা মন্ত্র ও রীতি ভিন্ন।