গুজরাত বাঁচাতে উন্নয়নের বন্যা, সরকারি মঞ্চে মোদীর রাজনৈতিক প্রচারকে খোঁচা বিরোধীদের
আডবাণী-বাজপেয়ী পরবর্তী যুগে বিজেপির উত্থানের আঁতুড়ঘর হল গুজরাত। সেই গুজরাত ধরে রাখতে মরিয়া বিজেপি। গুজরাত বাঁচাতে মোদী রীতিমতো কল্পতরু হয়ে উঠেছেন। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে, আমদাবাদ থেকে বনসকান্থা, নভসারি থেকে সুরাত, গুজরাতের কোনও এলাকাই মোদীর শিলান্যাস-উদ্বোধনের তালিকা থেকে বাদ যায়নি। বিরোধীরা খোঁচা দিয়ে বলছেন, চলতি বছর বাজেটে দেশের শিক্ষা খাতে ১ লক্ষ ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে মোদী সরকার। অন্যদিকে, কেবল গুজরাত নির্বাচনের জন্যই তার বেশি অর্থের প্রকল্প উপহার দিয়ে ফেলেছেন মোদী।
১৫ অক্টোবর হিমাচল প্রদেশের ভোট নির্ঘন্ট ঘোষণা হলেও, এখনও নির্বাচন কমিশন গুজরাতের ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি। বিরোধীরা বক্তব্য, মোদীর গুজরাত সফর আপাতত শেষ, এবার নির্বাচন কমিশন নাকি গুজরাতের ভোট ঘোষণা করবে। তাদের অভিযোগ, ভোট ঘোষণা হয়ে গেলে নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি জারি হয়ে যেত, সেক্ষেত্রে মোদীর কর্মসূচি, প্রকল্প উদ্বোধন বা শিলান্যাস বাধা পড়ত। তাই নাকি এমনটা করেছে নির্বাচন কমিশন।
গুজরাতে গিয়ে প্রায় ১ লক্ষ ১৬ হাজার কোটি টাকার সরকারি প্রকল্পের শিলান্যাস-উদ্বোধন সেরেছেন মোদী। পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থার কারখানা উদ্বোধন ও সম্প্রসারণের মতো অনুষ্ঠানেও হাজির ছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি বছরের মার্চে গুজরাতে রাষ্ট্রীয় প্রতিরক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়, পঞ্চায়েত সম্মেলন, খেল মহাকুম্ভ অনুষ্ঠানে যোগ দেন মোদী। এপ্রিল থেকে গুজরাতজুড়ে নানান প্রকল্পের শিলান্যাস-উদ্বোধন শুরু হয়। দাহোদ, পাঁচমহল, বডোদরা, নভসারি, সবরকান্থা, ভালসাদ, আমদাবাদ, ভারুচ, সুরাত, রাজকোট, জুনাগঢ়, মেহসানা, কোনও জেলাই নাকি মোদীর ভোটমুখী উন্নয়ন থেকে বাদ পড়েনি। এছাড়াও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রতি মাসেই গুজরাতের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তিনি। পাতিদার শিল্পপতিদের সম্মেলন থেকে স্বামীনারায়ণ মন্দিরের যুব সম্মেলন, সর্ব ঘটে ছিলেন মোদী।
বিরোধীদের অভিযোগ সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন করতে গিয়ে সরকারি খরচে নির্বাচনী জনসভা করেছেন মোদী। সরকারি খরচে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে রাজনৈতিক বক্তৃতা করেছেন মোদী। নিজের ঢাক পিটিয়েছেন। ভোটের প্রচার করেছেন। বিরোধীদের স্পষ্ট অভিযোগ, সরকারি কর্মসূচির নামে রাজনৈতিক প্রচার চালিয়ে গিয়েছেন মোদী। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপির রাজনৈতিক কর্মসূচি শেষ হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এবার কি দয়া করে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করবে?