কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক নিয়ে সংসদীয় কমিটিতে আলোচনায় রাজি নয় মোদী সরকার
মোদী জমানায় কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে, গোটা দেশ তার সাক্ষী। কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের অবনমন নিয়ে আলোচনায় বসতে চায় বিরোধীরা, কিন্তু মোদী সরকার তাতে একেবারেই রাজি নয়। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যৌথভাবে তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেডি ও জেডিইউয়ের মতো বিরোধী দলগুলি সরব হয়েছে৷
স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির দায়িত্বে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ ব্রিজলাল আসার পরে, দ্বিতীয়বার বৈঠকে বসেছিল কমিটি। সেখানেই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো নিয়ে আলোচনার দাবি জানান তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন৷ কিন্তু চেয়ারম্যান ব্রিজলাল সেই দাবি নস্যাৎ করতেই সরব হয় বিরোধীরা। মোদী সরকারের বিরুদ্ধ বারবার যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। অবিজেপি রাজ্যের আমলাদের নিয়ে টানাটানি, নিজেদের পছন্দের লোককে রাজ্যপাল করে পাঠিয়ে সমান্তরাল সরকার চালানোর অপচেষ্টা, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাদের দিয়ে রাজনৈতিক বিরোধীদের নাজেহাল করানো, ইত্যাদি নানানভাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো লঙ্ঘন করছে বিজেপি সরকার, দীর্ঘদিন ধরে বিরোধীরা এমনই অভিযোগ করে যাচ্ছে। সেই কারণেই সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে এই নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিল বিরোধীরা। কমিটির পূর্বতন চেয়ারম্যান অভিষেক মনু সিংভিরও তাতে মত ছিল। কিন্তু কমিটির রদবদলের জন্য সে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়৷
তৃণমূল সাংসদ তথা কমিটির সদস্য ডেরেক ও ব্রায়েন লিখিতভাবে নব নিযুক্ত চেয়ারম্যানের কাছে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার দাবি জানান। তা নস্যাৎ করে, উত্তর-পূর্বের রাজ্যের হালহকিকত, সংশোধনাগার সংস্কার, পুলিশি আধুনিকীকরণের মতো একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এককথায়, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক নিয়ে কোনরকম আলোচনায় বসতে চায় না মোদী সরকার।
তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন এর তীব্র প্রতিবাদ করেন। কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, রভনীত সিং বিট্টু, বিজেডির সুজিত কুমার, জনতা দল ইউনাইটেড সাংসদ দুলালচন্দ্র গোস্বামীরাও সরব হন। বিরোধীদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বৈঠক। তৃণমূলের রাজ্যসভা দলনেতার বক্তব্য, এতেই প্রমাণ হয় মোদী সরকার কোনমতেই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো নিয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী নয়৷ দেশের অবিজেপি রাজ্যগুলির অভিযোগ, তাদের স্বাধীনতা হরণের চেষ্টা করছে মোদী সরকার। ক্রমশ দেশকে রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।