সংসদীয় কমিটিতে নেই একটিও চেয়ারম্যানশিপ, ফের বঞ্চিত তৃণমূল
স্ট্যান্ডিং কমিটির পর হাউস কমিটিতেও একই জিনিসের পুনরাবৃত্তি ঘটাল বিজেপি। ফের বঞ্চনার শিকার তৃণমূল। একুশের নির্বাচনে বাংলায় হার কী কোনওভাবেই ভুলতে পারছেন না মোদী-শাহ! তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে তাদের কার্যকলাপ। গত ২০ সেপ্টেম্বর দৃষ্টিভঙ্গি জানিয়েছিল, সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে তৃণমূল সাংসদদের ছেঁটে ফেলতে পারে মোদী সরকার। ৪ অক্টোবর পুনর্গঠিত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির পদাধিকারী সদস্যদের নাম প্রকাশ্যে আসতেই সত্যি হয়েছিল দৃষ্টিভঙ্গির সেই সম্ভাবনা। সংসদের ২৪টি স্ট্যান্ডিং কমিটির পর, এবার একটি হাউস কমিটিরও চেয়ারম্যান পদ পেল না তৃণমূল কংগ্রেস।
সংসদের দুই কক্ষ মিলিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদের সংখ্যা ৩৬, কিন্তু স্ট্যান্ডিং কমিটি বা হাউস কমিটির কোনওটিতেই চেয়ারম্যান পদ পাননি জোড়াফুল সাংসদরা। অন্যদিকে, মাত্র পাঁচ জন সাংসদ নিয়ে এআইএডিএমকে একটি হাউস কমিটির চেয়ারম্যান পদ পেয়েছে। বিএসপির সাংসদ সংখ্যা ১১, তারাও একটি কমিটির চেয়ারম্যান পদ পাচ্ছে। ১৬ জন সাংসদের টিআরএস এবং ২১ জন সংসদ থাকা জেডিইউ একটি করে কমিটির চেয়ারম্যান পদ পেয়েছে। ২১ জন সাংসদের বিজেডি দুটি কমিটির চেয়ারম্যান পদ পেয়েছে। ২২ সাংসদ থাকা শিবসেনার ভাগ্যে একটি কমিটির চেয়ারম্যান পদ জুটেছে। ওয়াইএসআরের সাংসদ সংখ্যা ৩১, তাদের ভাগে জুটেছে ২টি চেয়ারম্যানশিপ । ডিএমকে-র সাংসদ সংখ্যা ৩৪, তারা তিনটি কমিটির চেয়ারম্যান পদ পাচ্ছে। ৮৪ জন সাংসদ নিয়ে কংগ্রেস পাঁচটি কমিটির চেয়ারম্যান পদ পেয়েছে। আম আদমি পার্টির রাজ্যসভায় ১০টি সংসদ থাকলেও একটিও চেয়ারম্যানশিপ পাননি তারা। তাহলে কী বিজেপির সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা দলগুলি কম সাংসদ থাকলেও চেয়ারম্যানশিপ পেয়েছে? এরকমই প্রশ উঠছে।
আম আদমি পার্টির লোকসভায় কোনও প্রতিনিধি নেই, যদিও রাজ্যসভায় তাদের সাংসদের সংখ্যা ১০, কিন্তু তাদের ভাগ্যে কোনও কমিটির চেয়ারম্যান পদ জোটেনি। শোনা যাচ্ছে, এই নিয়ে আপ অধ্যক্ষের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাবে। যদিও তৃণমূল সংসদীয় দল সূত্রে খবর, চেয়ারম্যান পদ না পাওয়া নিয়ে তারা কোনও রকম পদক্ষেপ করবে না। উল্লেখ্য, ৫-৬ জন তৃণমূল সাংসদ ছাড়া প্রায় সকলেই কোনও না কোনও কমিটির শুধুমাত্র সাধারণ সদস্য পদ পেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, অধিকাংশ স্ট্যান্ডিং কমিটি ও হাউস কমিটির চেয়ারম্যান পদগুলিতে মূলত বিরোধী দলের সাংসদরাই বসেন। দেশের গণতান্ত্রিক পরিসরের মর্যাদা রক্ষা করতে এমনটাই হয়ে আসছে। কিন্তু বিজেপি সংসদের মর্যাদা, চিরাচরিত ঐতিহ্যকে ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। দীর্ঘদিনের রীতি ভেঙে সংসদের ৩১টি কমিটির সর্বেসর্বার পদ নিজেদের দখলে রেখেছে বিজেপি। প্রসঙ্গত, বাংলায় রাজ্য বিধানসভায় বিজেপিকে ৭-৮ কমিটির চেয়ারম্যান পদ দেওয়া হয়েছিল কিন্তু রাজনৈতিক স্বার্থ মেটাতে বিজেপি বিধায়করা প্রত্যেকেই পদত্যাগ করেন।
তৃণমূল সংসদীয় দল সূত্রে খবর, সংসদীয় কমিটিতে এহেন বঞ্চনার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল কোনও পদক্ষেপ করবে না। তারা কোনও চিঠিও দেবে না। তৃণমূল ভিক্ষা চাইবে না। সংসদের ভিতরে ও বাইরে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন জারি রাখবে তৃণমূল। মোদী সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরা ও চক্রান্তের পর্দা ফাঁস করা অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাবে তৃণমূল। ইডি, সিবিআই, সবকিছুর বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে লড়বে তৃণমূল।