গুজরাত নিয়ে মোদীর দাবির বিপক্ষে শাহ, পদ্মের পাওয়ার সেন্টার কি দ্বিধাবিভক্ত?
ভোটের প্রাককালে দু-ভাগে ভাগ হয়ে গেল গুজরাত বিজেপি! কেশুভাই প্যাটেল নাকি নরেন্দ্র মোদী? গুজরাতে পদ্ম ফিরবে কার হাত ধরে? সম্প্রতি মোদী দাবি করেছেন আজকের গুজরাত নাকি তিনি তৈরি করেছি। মোদীর এই দাবি ঘিরে প্রবীণ বিজেপি নেতাদের সুর সপ্তমে। ক্ষুব্ধ নেতাদের মানভঞ্জনে ছুটে গিয়েছেন অমিত শাহ। প্রত্যেকের সঙ্গে বৈঠক করছেন। বিক্ষুব্ধদের অনেকেই মোরবির সেতু দুর্ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন।
রাজনৈতিক মহলের মত, শাহও গুজরাত নিয়ে মোদীর দাবি ভালভাবে নেননি। সকলকে এড়িয়ে নিজেই মুখ্যমন্ত্রীর ‘মুখ’ ঘোষণা করে দিয়েছেন। দিল্লিতে কান পাতলে মোদী-শাহর ঠান্ডা লড়াইয়ের গল্প শোনা যাচ্ছে। ১৯৯৫ সালে গুজরাতের বিজেপি সরকারের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হন কেশুভাই প্যাটেল। একের পর এক উন্নয়নে গুজরাতবাসীর মন জয় করেছিলেন তিনি, তাঁকেই উন্নত গুজরাতের প্রাণপুরুষ বলে মনে করতে গুজরাত। মোদী ছিলেন কেশুভাই প্যাটেলের ঘনিষ্ঠ শিষ্য। যদিও মুখ্যমন্ত্রী হয়েই রাজনৈতিক গুরুকে অস্বীকার করে একচ্ছত্র ক্ষমতা কায়েম করেন মোদী। দিল্লিতেও একই কাজ করেছেন মোদী, দলের ক্ষমতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে যেতে হয়েছে লালকৃষ্ণ আদবানি, মুরুলী মনোহর যোশী, বেঙ্কাইয়া নাইডুদের। রবিশংকর প্রসাদ, মুক্তার আব্বাস নাকভি ও প্রকাশ জাওড়েকরদের অবস্থাও তাই। নীতিন গড়করি, রাজনাথ সিংহরাও অনেকটাই সাইড লাইনের ধারে!
অন্যদিকে, গুজরাতে প্রার্থীতালিকা ঘোষণার পর থেকেই ক্ষোভের আগুন জ্বলছে গেরুয়া শিবিরে। মোদী ‘এই গুজরাট আমার তৈরি’ দাবি সেই আগুনে ঘি ঢেলেছে। দলের প্রবীণ নেতা, কর্মীদের বক্তব্য, গুজরাত ও রাজ্য বিজেপির উন্নতির কারিগর প্রয়াত কেশুভাই প্যাটেল। নব-গুজরাতের ভিত্তি স্থাপন, বিজেপির বিস্তার সব কিছুর নেপথ্যেই কেশুভাই। পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নেমেছেন শাহ। তিনি যে এ বিষয়ে মোদীর সঙ্গে একমত নন তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তবে কি পদ্মের ‘পাওয়ার সেন্টার’ দু’ভাগে ভাগ হতে চলেছে? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, গুজরাত ভোটকে কেন্দ্র করে মোদী-শাহের লড়াই শুরু হতে চলেছে?