গুজরাত নির্বাচনের আগে রাজ্যে কেন রাষ্ট্রপতি? কোন অস্ত্রে শান বিজেপির?
গুজরাত বিধানসভা ভোটে বিজেপির তাস কি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মূ? এমনটাই মনে করছেন দেশের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মূকে ঘিরেই কি গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের অঙ্ক কষছে বিজেপি। দ্রৌপদী মুর্মূকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি তথা এনডিএ। তিনি জয়ী হওয়ার পর তাদের দাবি ছিল, বিজেপির জন্যই ভারত প্রথম কোনও ‘আদিবাসী রাষ্ট্রপতি’ পেল। নতুন রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর পরিচয় দিতে গিয়ে টুইটে প্রান্তিক শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। তখনই স্পষ্ট হয়েছিল সব কিছুর নেপথ্যে রয়েছে ভোটের অঙ্ক। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আদিবাসী ভোটকে একজোট করে নিজেদের দিকে আনতেই বিজেপি দ্রৌপদী মুর্মূকে প্রার্থী করে।
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, গুজরাতের প্রায় ১৫ শতাংশ ভোটার আদিবাসী। গুজরাতের আদিবাসী অধ্যুষিত বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে কংগ্রেস বরাবর দাপট দেখিয়ে এসেছে। হাত শিবির সেই ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসাতে মরিয়া বিজেপি। সেই উদ্দেশ্যেই দ্রৌপদীকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা। পরিসংখ্যান বলছে, দেশের মোট আদিবাসী জনসংখ্যার ৫ ভাগের ১ ভাগ গুজরাতে বসবাস করে। গুজরাতের মোট বাসিন্দার ৭ ভাগের ১ ভাগ আদিবাসী। গুজরাতে ২৭টি আসন তফসিলি উপজাতির জন্য সংরক্ষিত। ১৮২ আসনের গুজরাত বিধানসভার ৪৭টি বিধানসভা এলাকা আদিবাসী ভোটারের পরিমাণ ১০ শতাংশের বেশি। ৪০টি আসনে ২০ শতাংশের বেশি এবং ৩১টি আসনে ৩০ শতাংশেরও বেশি আদিবাসী ভোটার।
টানা ২৭ বছর ধরে গুজরাত শাসন করছে বিজেপি। গুজরাতে বিজেপির উত্থানে বড় ভূমিকা নিয়েছে। তাই গুজরাতকে হাতছাড়া করতে চান না মোদীরা। আশির দশকে গুজরাতে ৬০ শতাংশ আদিবাসী ভোট ছিল কংগ্রেসের দখলে। গুজরাতে এতদিন বিজেপি ক্ষমতায় থাকার পরেও আদিবাসী সমাজে কংগ্রেসের প্রভাব রয়ে গিয়েছে। ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও কংগ্রেস ১৭টি আদিবাসী আসনে জয়ী হয়। সেখানে বিজেপি মাত্র ৯টি আসনে জেতে। এবার কংগ্রেস ও আপ গুজরাতের ভোট ময়দানে নেমেছে। বিজেপির কাছে লড়াই সহজ নয়। তাই গুজরাতের আদিবাসীদের মন পেতে দ্রৌপদী অস্ত্রকেই হাতিয়ার করেছে বিজেপি।