কেন্দ্রের চাপে ট্রায়ালের নির্দিষ্ট প্রক্রিয়াগুলি এড়িয়েই বাজারে COVAXIN? চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
হায়দ্রাবাদ-ভিত্তিক সংস্থা ভারত বায়োটেক, কোভিড-১৯ –এর টিকা কোভ্যাক্সিন তৈরি করার বেশ কিছু নিয়মের কাটছাট করতে বাধ্য হয়েছিল। ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা, সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ডস কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (CDSCO) এর জন্য ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছিল। সম্প্রতি STAT-এর তদন্ত রিপোর্টে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
এই অভিযোগের জবাবে, সংস্থার একজন ডিরেক্টর বলেছেন, এই দেশীয় ভ্যাকসিন তৈরি করার জন্য তাঁদের উপর ‘রাজনৈতিক চাপ’ ছিল। সেই কারণে তাদের ট্রায়ালের নির্দিষ্ট প্রক্রিয়াগুলি এড়িয়ে যেতে হয়েছিল। ট্রায়ালের প্রক্রিয়াতে তাদের যে পরিবর্তনগুলি আনতে হয়েছিল তা সিডিএসসিও (CDSCO) দ্বারা ‘পরীক্ষিত’ হয়েছিল। টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়ালে ‘গতি’ আনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
এই প্রথম ওই ওষুধ নির্মাতা সংস্থার কোনও ঊর্ধ্বতন কর্তা তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাব দিলেন। এপ্রিলে, হু (WHO) জাতিসংঘের সংস্থাগুলিতে কোভ্যাক্সিনের সরবরাহ স্থগিতের নির্দেশ দেয়। ট্রায়ালে বেশ কিছু ঘাটতির বিষয় তারা উল্লেখ করে। হু’র অভিযোগ কোভেক্সিনের ট্রায়ালের সময় ‘চিটিং’ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত বিপদজনক। হু’র আরও অভিযোগ ছিল, ভারত বায়োটেক কোভ্যাক্সিনের জন্য লাইসেন্স পাওয়ার পরে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু পরিবর্তন করে। কিন্তু কী কী পরিবর্তন করা হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য ওই সংস্থার তরফে দেওয়া হয়নি।
গোটা বিশ্বে যে সব কোভিড টিকা রয়েছে তার মধ্যে একমাত্র কোভেক্সিনের উপর হু স্থগিতাদেশ জারি করেছে। অথচ সংস্থার তরফে এই স্থগিতাদেশ সম্পর্কিত কআনও বিবৃতি জারি করা হয়নি।
STAT রিপোর্ট অনুযায়ী, কোভ্যাক্সিনের ক্লিনিকাল ট্রায়ালের তিনটি ধাপে বেশ কিছু অনিয়ম ছিল।
২০২০ সালের শেষের দিকে ভোপালের একটি হাসপাতালে কোভ্যাক্সিনের ক্লিক্যাল ট্রায়ালের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী একজনের মৃত্যু হয়েছিল। যা নিয়ে সরকার একটি তদন্ত করে এবং সব অভিযোগ খারিজ করে দেয়। সেই সময় বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল।
২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে কোভেক্সিনকে ভারত সরকার ছাড়পত্র দিয়েছিল। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ভারত বায়োটেকের তরফে যে তথ্য সেই সময় দেওয়া হয়েছিল, তা যথেষ্ট ছিল না। অথচ তা সত্ত্বেও ভারত সরকার সে সময় কোভ্যাক্সিনকে ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছিল। যা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা সে সময় অবকা হয়েছিলেন।
যদিও এখন এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসার পর, সেই সময় যে সব বিজ্ঞানিরা ভারত সরকারের তরফে বিষয়গুলির তদারকি করছিলেন তারা সরকারি চাপের কথা অস্বীকার করছেন।