দেশ বিভাগে ফিরে যান

পুরনো মদ নতুন বোতলে ঢেলে! শীতকালীন অধিবেশনে ডেটা প্রোটেকশন বিল আনছে কেন্দ্র

November 19, 2022 | 2 min read

আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স, ডেটা সায়েন্স, ছবি সৌজন্যেঃ iimtindia

আগামী শীতকালীন অধিবেশনে ডেটা প্রোটেকশন বিল আনছে কেন্দ্র। এই বিলটি নতুন নয়। গত আগস্টেই বিরোধীদের আপত্তির মুখে এই বিলটি প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছিল কেন্দ্র।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির স্পষ্ট অনুমোদন ছাড়া তাঁর ব্যক্তিগত তথ্যের ব্যবহার রোখার কথা বলে কেন্দ্র ২০১৯ সালে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা বিল আনে। সম্মতি, ব্যক্তিগত তথ্য, ব্যক্তিগত তথ্যের সংরক্ষণ, কোন কোন ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণে ছাড় দেওয়া হতে পারে এবং ব্যক্তির অধিকারের মতো কিছু বিষয় উল্লেখ করা ছিল খসড়া বিলে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন দেওয়ার পরে সেটি যায় সংসদীয় যৌথ কমিটিতে।


দু’বছরেরও বেশি আলোচনার পরে, যৌথ কমিটি বিলে ৮১টি পরিবর্তন এবং ১২টি ‘গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ’ করে রিপোর্ট দেয়। ২০২১-এর নভেম্বরে সেই রিপোর্ট চূড়ান্ত হলে কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ, মণীশ তিওয়ারি, তৃণমূলের ডেরেক ও’ ব্রায়েন, মহুয়া মৈত্র, বিজু জনতা দলের অমর পট্টনায়েকের মতো অনেকে ‘ডিসেন্ট নোট’ দিয়ে আপত্তি জানান। তাঁরা দাবি করেছিলেন, বিলে দু’টি সমান্তরাল জগত হয়ে রয়েছে— একটি বেসরকারি ক্ষেত্রের জন্য, আঁটসাঁট; আর অন্যটি সরকারের জন্য প্রযোজ্য, সেখানে প্রচুর শিথিলতা। ২০১৭ সালে শীর্ষ আদালত ব্যক্তিগত পরিসরের অধিকারকে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে।

আবার ফের পুরনো মদ নতুন বোতলে ঢেলে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে ডেটা প্রোটেকশন বিল পেশ করতে চলেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। মোদী আনা বিলের বিরুদ্ধে সবথেকে বড় অভিযোগ ছিল, এই ডেটা প্রোটেকশন বিলের আওতা থেকে সরকারি দপ্তর, সরকারি সংস্থা, সরকারি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় সম্পূর্ণ ছাড় দেওয়া হয়েছিল। ইন্টারনেট ফ্রিডম ফাউন্ডেশন বলেছিল, বৃহৎ কর্পোরেটকে বাণিজ্যিক সুবিধা দেওয়ার জন্যই এই বিল আনা হয়েছে। কারণ, তথ্য ব্যবহারবিধি লঙ্ঘন করা হলে নগণ্য জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিশেষত নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারকে আমল দেওয়া হয়নি। এই সম্মিলিত বিরোধিতায় কেন্দ্রীয় সরকার ওই বিল প্রত্যাহার করে নেয়। কিন্তু বর্ষকালীন অধিবেশনে বিল প্রত্যাহারের পর কয়েক মাসের মধ্যেই আবার সেই বিল কিছু সংশোধন করে আনতে উদ্যোগী কেন্দ্র।

নয়া খসড়া বিল প্রকাশ করে মতামত চেয়েছে কেন্দ্র। সর্বোচ্চ ৫০০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানার ব্যবস্থা ধার্য করা হয়েছে খসড়া বিলে। পাশাপাশি একটি সামগ্রিক সংস্থা গঠন করা হবে। যাকে বলা হবে ডেটা প্রোটেকশন বোর্ড অফ ইন্ডিয়া। নাগরিকদের তথ্যকে নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত কারণ বহির্ভুত উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হলে ২৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার নির্দেশ দিতে পারে এই বোর্ড। টেলিকম ও তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব শুক্রবার বলেছেন, খসড়া বিলে অনেক পরিবর্তন ও সংশোধন করা হয়েছে। নাগরিকদের স্বার্থ সুরক্ষাই এই বিলের প্রধান লক্ষ্য‌।

এদিকে ডেটা প্রোটেকশন বিল নিয়ে বহুজাতিক কর্পোরেটদের পক্ষ থেকে আপত্তি করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, এই বিলের অন্যতম একটি ধারায় দেশবাসীর তথ্য বিদেশে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে বিশেষ বিধিনিষেধ রাখা হয়েছে। বহু বহুজাতিক সংস্থাই ব্যবসায়িক কারণে ওই কাজ করে থাকে।

নয়া বিলের খসড়াটি আগামী মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত সকলের অবগতির জন্য পাবলিক ডোমেনে রাখা থাকবে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ এবং যে কেউ-ই এই নিয়ে নিজের মতামত জানাতে পারেন। যা জমা পড়ার পর সব দিক খতিয়ে দেখে, প্রয়োজনে খসড়ায় কিছু অদলবদল করে, তা সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে পেশ করা হবে আলোচনার জন্য।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#data protection bill, #Data protection act, #Parliament, #Lok Sabha

আরো দেখুন