নোট বাতিলের ১৭ মাস আগেই নতুন নোট ছাপা শুরু? ঘনাচ্ছে রহস্য
এক তথ্যেই সব ঘেঁটে ‘ঘ’! কারেন্সি নোট প্রেস বলছে, ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৬-র ডিসেম্বরের মধ্যে সাড়ে ৩৭ কোটি নতুন ডিজাইনের ৫০০ টাকার নোট ছাপা হয়েছে দেশে। এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই গণ্ডগোল। ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর, রাত ৮টায় মোদী নোট বাতিলের ঘোষণা করেছিলেন। স্বভাবতই প্রশ্ন চলে আসে, ঘোষণার আগেই ৫০০ টাকার নতুন নোট ছাপা শুরু হল? নতুন ডিজাইনের ৫০০ টাকার নোটে উর্জিত প্যাটেলের স্বাক্ষর তাহলে কী করে এল? তখন তো তিনি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরই নন। মুম্বইয়ের প্রবাসী বাঙালি তথা আরটিআই কর্মী মনোরঞ্জন রায়ের আরটিআইয়ের উত্তরে নাসিকে অবস্থিত কারেন্সি নোট প্রেসের দেওয়া জবাবকে অস্ত্র করে, দেশের শীর্ষ আদালতে মোদী সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন তিনি।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতে কদিন আগেই মোদী সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে নোট বাতিলের আলোচনা শুরু হয়েছিল। ফেব্রুয়ারিতে আলোচনা শুরু হয়ে থাকলে, নোট বাতিলের ১৭ মাস আগেই নতুন নোট ছাপা শুরুর কারণ কি? মনোরঞ্জন রায়ের আরটিআইয়ের উত্তরে ২০১৭ সালের ৭ এপ্রিল কারেন্সি নোট প্রেসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মণীশ শঙ্কর লিখিতভাবে জানিয়েছেন, এপ্রিল ২০১৫ থেকে ডিসেম্বর ২০১৬-এর মধ্যে ৩৭ কোটি ৫৪ লক্ষ ৫০ হাজার নতুন ডিজাইনের ৫০০ টাকার নোট ছাপা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪ কোটি ৫০ লক্ষ নোট রিজার্ভ ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে দায়ের করা নোট বাতিলের যৌক্তিকতা সম্পর্কিত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া হলফনামায় মোদী সরকার যে তথ্য দিয়েছে, তার সঙ্গে আরটিআইয়ের জবাবের তথ্যগত গড়মিল রয়েছে। সেই কারণেই পাঁচ বছর আগের আরটিআইয়ের জবাব ফের প্রাসঙ্গিত হয়ে উঠেছে।
মনোরঞ্জনবাবুর অভিযোগ, আদালতকে বিভ্রান্ত করতে মিথ্যা বলছে মোদী সরকার। সরকারি ছাপাখানার তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর দাবি, ঘুরাম রাজন আরবিআইয়ের গভর্নর থাকাকালীন নতুন ডিজাইনের কোনও ৫০০ টাকার নোট ছাপা হয়নি। উর্জিত প্যাটেলের আমলে নতুন নোট ছাপা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে আরবিআই গভর্নর হিসেবে উর্জিত প্যাটেল দায়িত্ব নিয়েছেন। সেখানেই তিনি প্রশ্ন তুলছেন, দেড় বছর আগে থেকে কীভাবে নতুন ডিজাইনের ৫০০ টাকার নোট ছাপা? দেড় বছর আগে ছাপা হলে, তাতে উর্জিত প্যাটেলের সই এলোই বা কোথা থেকে? ইতিমধ্যেই মামলায় যুক্ত হতে চেয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠির মাধ্যমে আবেদন করেছেন আরটিআই কর্মী।