শহরজুড়ে যেন ফুটবলের মরশুম, এক মাসের জন্যে আড়াআড়ি ভাগ বন্ধুত্ব
কলকাতাজুড়ে ফুটবল ফিভার। চায়ের ভাঁড় থেকে পাড়ারমোড়, সব জায়গাতেই তর্ক। গাঙ্গুলিবাগান না আর্জেন্টিনার কোনও পাড়া ধরতে পারবেন না। পাড়ায় ঢোকার মুখেই আর্জেন্টিনা ফ্যান ক্লাবের বিশাল এক গেট। রাস্তাজুড়ে মাথার উপর ঝাড়বাতির মতো ছোট ছোট ফুটবল। মেসি আর ডি’মারিয়ার অতিকায় কাটআউট। বিকেলে জায়ান্ট স্ক্রিনে শুরু হয়ে যাচ্ছে খেলা। গোটা বিষয়ের হোতা উত্তম সাহা, তিনিই আর্জেন্টিনা ফুটবল ফ্যান ক্লাবের সম্পাদক।
আবার উত্তর কলকাতার বিডন স্ট্রিটের ফকির চক্রবর্তী লেনে ঠিক উল্টো ছবি, হলুদে-সবজে পাড়া পেলের দেশের সমর্থক। দিশারি ক্লাব গোটা গলিটিকে আলপনা-দেওয়াল চিত্রে হলুদ-সবুজ রঙে রাঙিয়ে দিয়েছে। ফুটবল তারকাদের মুখও আঁকা হচ্ছে। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার পতাকা টাঙানো ভাগাভাগি করে। আবার খেলার কথা উঠলেই একে অন্যকে তেড়ে উঠছে। কলকাতার গলি ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা, জার্মানি-পর্তুগালে ভাগ হয়ে গিয়েছে। কোথাও কোথাও আবার ফুটবলারদের ছবি দেওয়া হচ্ছে।
তবে কেবল পাড়া নয়, বিশ্বকাপ বাড়ির মধ্যেও বিভাজন ঘটিয়েছে। ভাই-ভাই মুখ দেখাদেখি বন্ধ। নতুন টিভি কেনার ধুম পড়েছে। বিশ্বকাপের বিশ্বযুদ্ধ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও কাজিয়া বাঁধিয়ে দিয়েছে। আর্জেন্তিনার পতাকা টাঙাবেন ভেবেছিলেন স্ত্রী, মুখের উপর না বলে দিয়েছেন ব্রাজিলের সমর্থক স্বামী। হাঁড়ি আলাদা হোক, কথা বন্ধ হোক, বন্ধুর মুখ দেখাদেখি বন্ধ হোক, তবুও এই একটা মাস প্রিয় দলের সঙ্গ ছাড়বে না বাঙালি। কারণ বঙ্গ সন্তানরা এখন ওয়ার্ল্ডকাপ জ্বরে কাবু।