মরুদেশে সাম্বার তালে ঝড় তুললেন রিচার্লিসন, স্ট্রাইকার খরা কাটল ব্রাজিলের
এমন একটি মুহূর্তের জন্যই তো ব্রাজিলের ফুটবল সুন্দর! এমন মুহূর্ত অবশ্য সব সময় আসে না। কখনও কখনও আসে, যখন একজন খেলোয়াড়ের পায়ে ভর করে পৃথিবীর সমস্ত সৌন্দর্য। এমন মুহূর্তেরা ফুল হয়ে ফোটে। আজ মরুভূমির বুকে তেমনই এক ফুল ফুটিয়েছেন রিচার্লিসন। অবশ্য এমন গোল এবং জাদুকরী মুহূর্তের জন্যই তো বিশ্বকাপ। যাকে ঘিরে রাজ্যের উন্মাদনা।
সার্বিয়ান ডি-বক্সে ভিনিসিয়ুসের বাড়ানো বল দুর্দান্ত স্কিলে রিসিভ করে বাইসাইকেল কিকে চোখ ধাঁধানো গোল। অসাধারণ! এটাই তো জোগো বনিতা অর্থাৎ আক্রমণাত্মক সুন্দর ফুটবল। এটাই ব্রাজিল ফুটবলের দর্শন। বলা যায় রিচার্লিসনের এই গোলটি বিশ্বকাপের এখন পর্যন্ত সেরা গোল।
আর্জেন্টিনার জন্য অভিশপ্ত হয়ে ওঠা লুসেইল স্টেডিয়ামে ব্রাজিলের হয়ে শুধু বাইশের বিশ্বকাপের বউনি ম্যাচে জোড়া করলেন না রিচার্লিসন, সেইসঙ্গে দীর্ঘ সময়ের বক্স স্ট্রাইকারের খরা কাটার ইঙ্গিত দিলেন ব্রাজিলের জন্য। রোনাল্ডো ৯ নম্বর জার্সি পরে খেলতেন। কাকতালীয় হল রিচার্লিরও জার্সি নম্বর তাই।
রোনাল্ডো জমানার পর ব্রাজিলের (Brazil) আক্ষেপ ছিল, টিমে সব থাকলেও তেমন নিখুঁত স্ট্রাইকার আর আসছে না। যিনি গোলের গন্ধ পান। যাঁকে হয়ত সারা ম্যাচ খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু বক্সের ভিতর চকিতে তিনিই হয়ে উঠবেন ভয়ঙ্কর। এবার সম্ভবত সেই ব্রাজিলের সেই আক্ষেপ মিটতে চলেছে।
সাড়ে তিন বছর এভারটনে কাটিয়ে এবছর টটেনহ্যামে যোগ দেওয়া ২৫ বছরের এই ব্রাজিলীয়র চুলের রং সাদা। ওই রং দেখে ম্যাচের অনেকটা পর্যন্ত চিনতে হচ্ছিল, ওই তো রিচার্লিসন ঘুরেবেড়াচ্ছেন।
ম্যাচের ৬২ মিনিটে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। বল ফলো করে ঠেলে দিলেন জালে। ৭৩ মিনিটে রিচার্লি যে গোলটি করেছেন তা নিয়ে চর্চা হবে অনেকদিন।
মজার কথা হল, এবার ব্রাজিলের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে যেসব খেলোয়াড় সবচেয়ে বেশি চাপে আছেন তার মধ্যে রিচার্লিসন অন্যতম! একে তো ব্রাজিলের বিখ্যাত নয় নম্বর জার্সির চাপ। তারওপর সমর্থকদেরও তেমন পছন্দের নাম নন। তাঁকে একাদশে দেখে খোদ ব্রাজিল সমর্থকদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিরক্তি দেখিয়ে পোস্ট দিতে দেখা যায়। সে সব বিরক্তি ও সমালোচনার জবাব এর চেয়ে ভালো আর কীভাবে দিতে পারতেন রিচার্লিসন।