পেলের দেশের নতুন নায়ক রিচার্লিসনের সূর্যোদয়, সাম্বার এক লোকগাথা
রিচার্লিসনের জোড়া গোলে জয় দিয়ে কাতার বিশ্বকাপ শুরু করেছে পেলের দেশ, শেষ সাত ম্যাচে বছর পঁচিশের স্ট্রাইকারের গোলের সংখ্যা দাঁড়াল ৯, কোচ তিতে তাঁকে বলেছিলেন তুমি গোলের গন্ধ পাও। ব্রাজিলের ফুটবলপ্রেমীরা বলতে শুরু করেছেন, নয় নম্বর জার্সিটা যোগ্য উত্তরাধিকারী পেল।
কেমন ছিল রিচার্লিসনের জীবন, শুরুর গল্পটা একেবারেই সিনেমার মতো। লড়াই আর লড়াই, ব্রাজিলের নতুন নয়নের মণির বাবা ছিলেন একজন রাজমিস্ত্রি, মা বিক্রি করতে আইস ক্যান্ডি। পাঁচ ভাইদের মধ্যে যুধিষ্ঠির ছিলেন রিচার্লিসন, সব সময় পেট ভরা খাবারও জুটত না। ড্রাগ আর সমাজবিরোধীদের আঁতুড়ঘর নোভা ভেনেসিয়ায় বেড়ে উঠছিলেন তারকা। রিচার্লিসন আইসক্রিম বিক্রি বেচতেন, গাড়ি পরিষ্কার করতেন আর সঙ্গে ছিল ফুটবল। পেলের দেশের ছেলেরা ওই স্বপ্নটি সঙ্গে নিয়েই জন্মান। বাবার কিনে দেওয়া ফুটবল নিয়ে বস্তির অলিগলিতে খেলে বেড়াতেন রিচার্লিসন। ফুটবলই একদিন ডেকে আনল প্রাণ সংশয়। এক ড্রাগ ব্যবসায়ী রিচার্লিসনকে ড্রাগ চোর ভেবে বসলেন। বন্দুক ধরলেন রিচার্লিসনের মাথায়, বরাত জোরে সে যাত্রায় বেঁচে গেল রিচার্লিসন।
২০১৫-১৬ মরশুমে ব্রাজিলের দ্বিতীয় ডিভিশনের ক্লাব আমেরিকা মিনেইরোতে সুযোগ পান রিচার্লিসন। পরের মরশুমে ব্রাজিলের অন্যতম বড় ক্লাব ফ্লুমিনেসেতে সুযোগ পান তিনি। আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি রিচার্লিসনকে। ২০১৭-১৮ সিজনে ইংল্যান্ডের ক্লাব ওয়াটফোর্ডে খেলার সুযোগ পান রিচার্লিসন। তারপর মেলে এভার্টনে খেলার সুযোগ। এভার্টনের ইতিহাসে আজও রিচার্লিসন সব থেকে দামী খেলোয়াড়। চলতি মরশুমে টটেনহ্যাম হটস্পারে যোগ দেন রিচার্লিসন। ব্রাজিলের অনুর্ধ ২০ ও অনুর্ধ ২৩ দলেও খেলেছেন রিচার্লিসন। ২০১৯-এর কোপা জয়ী ব্রাজিল দলে, ২০২১-এ কোপায় বিজিত ব্রাজিল দলের সদস্য ছিলেন রিচার্লিসন। টোকিও অলিম্পিকে সোনা জয়ী দলেও ছিলেন রিচার্লিসন। চলতি বিশ্বকাপে জোড়া গোলে দিয়ে বিশ্বকাপ সফর শুরু করলেন রিচার্লিসন। এখন দেখার কাতারে আর কত ম্যাজিক দেখান তিনি!